গোলাপ গ্রাম

গোলাপ, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ফুল চাষ হয় গ্রামগুলোয়। এখানে গোলাপের মেরিন্ডি, লিংকন, তাজমহল, লালবাহাদুর, গোলাপ বাহাদুরসহ নানা প্রজাতির ফুল চাষ করে থাকেন চাষি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার ফুলের চাহিদা মেটাচ্ছেন এখানকার ফুলচাষি। এতক্ষণ বলা হচ্ছে ঢাকার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের ফুল চাষের কথা।

তিন গ্রামের একটি শ্যামপুর। গোলাপের চাষ বেশি হওয়ায় একে ‘গোলাপ গ্রাম’ও বলা হয়। পাশাপাশি বাগনিবাড়ি ও মইস্তপাড়া গ্রামেও ফুল চাষ হয়। নিজেদের সেরা গোলাপচাষি দাবি করে মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘দেশের আর কোনো জায়গায় আমাদের মতো গোলাপ চাষ করা হয় না।’

প্রায় ৩০ বছর আগে নওয়াববাগের কয়েকজন কৃষক শ্যামপুরে গোলাপ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে এখানকার প্রধান ফসল এটি।

প্রতি বিঘায় চার থেকে সাড়ে চার হাজার চারা রোপণ করা যায়। একেকটি চারার বাজারমূল্য ১৫-২০ টাকা। এছাড়া বছরে প্রতি বিঘায় ৬০-৭০ হাজার টাকা মূল্যের সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়।

কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও ফাল্গুনে গোলাপের ফলন ভালো হয়। বিয়ে, বিভিন্ন জাতীয় দিবস, ভালোবাসা দিবসসহ নানা অনুষ্ঠানে এ ফুলের কদর রয়েছে।

চাষিদের দাবি, সরকার প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করলে অধিক ফুল উৎপাদন সম্ভব। ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখানকার ফুল বিদেশেও রফতানি সম্ভব।

গোলাপ বাগান ১০ থেকে ১৫ বছর টেকে। তবে পর্যাপ্ত যত্ন করা গেলে ২০-২২ বছরও টিকে থাকে। তাই চাষিরা অন্য চাষ ছেড়ে ফুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। ফুল বিক্রির মাধ্যমে তাদের হাতে নিয়মিত নগদ অর্থ আসে। প্রথমে ফুল চাষ শুরু করা চাষিদের মধ্যে অন্যতম হলেন গোলাম আলী। ফুল চাষ করে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। মাজেদুল হক নামে এক কৃষক বলেন, সারা বছর গোলাপের খুচরা বজার ভালোই থাকে। তবে সে অনুযায়ী আমরা পাইকারি বাজার পাই না। চাষি মুকছেদ মিয়া জানান, ৬০ শতাংশের বাগান থেকে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে।