গ্যাস সরবরাহ বন্ধের আগে যথাযথ প্রচারের ব্যবস্থা নিন

 

রোববার সংসদ ভবন সংলগ্ন আসাদ অ্যাভিনিউ থেকে মিরপুর  পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা বড় ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। ওই দিন এ এলাকায় গ্যাস ছিল না। সকালে রান্না করতে গিয়ে দেখি চুলায় গ্যাস নেই। সব ফ্ল্যাটেই একই অবস্থা। বাড়িমালিকের বাসায় গিয়ে দেখি রাইস কুকারে বাচ্চার জন্য খাবার তৈরি হচ্ছে। পুরো ভবনের কেউই আগে থেকে জানতেন না গ্যাস বন্ধ থাকার বিষয়টি। পরে জানা গেলো, মেট্রোরেলের প্রকল্প কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৯ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক মিরপুর এলাকার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।

যথেষ্ট প্রচারণা ছাড়া এভাবে গ্যাস বন্ধ করে রাখার জন্য হাজার হাজার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না। রাস্তার পাশে ইটের চুলায় কাঠ পুড়িয়েও রান্না করতে হয়েছে অনেককে। বেশিরভাগ পরিবারকেই হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খেতে হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে রেস্তোরাঁ মালিকরা। তারা খাবারের দাম রেখেছে বেশি, যা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো বাড়তি যন্ত্রণা দিয়েছে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য হঠাৎ করে খাবার খরচ বাবদ বাড়তি ব্যয়ের ধকল সামলানো খুবই কষ্টকর।

বিপুল সংখ্যক মানুষকে অবগত করতে সীমিত পরিসরে মাইকিং করা মোটেই যথেষ্ট নয়। যথাযথ প্রচার-প্রচারণা হলে এলাকাবাসী পরিস্থিতি মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রাখত। পর্যাপ্ত মাইকিং, মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে আগে থেকে প্রচারের ব্যবস্থা নিলে সাধারণ মানুষ এ ভোগান্তির শিকার হতো না।

উন্নত বিশ্বেও বিভিন্ন প্রয়োজনে গ্যাস সরবরাহ সাময়িক বন্ধ করা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। এটি তেমন ব্যয়সাধ্য নয়। টিভি চ্যানেল ও এফএম রেডিওগুলো জনস্বার্থে বারবার কোনো সেবার সাময়িক বন্ধের বুলেটিন প্রচার করতে পারে।

আমরা আশা করি, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার আগে সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীকে এ বিষয়ে অবগত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

 

শামসুন্নিসা পারুল

কল্যাণপুর, ঢাকা