Print Date & Time : 31 July 2025 Thursday 9:31 pm

গ্রাহক অনুপাতে সর্বোচ্চ কল ড্রপ রবি আজিয়াটার

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক বছরে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর কল ড্রপ হয়েছে প্রায় ১৮১ কোটি ২৫ লাখ। এর মধ্যে একের অধিক কল ড্রপ হয়েছে প্রায় ৪১ কোটি ৪৯ লাখ। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি ৩৭ লাখ মিনিট।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত ১২ মাসের তথ্য বিশ্লেষণে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, এক বছরে সবচেয়ে বেশি কল ড্রপ হচ্ছে দেশের বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের। তবে গ্রাহক অনুপাতে কল ড্রপে শীর্ষে রয়েছে রবি আজিয়াটা।

বিটিআরসির তথ্যমতে, এক বছরে রবি আজিয়াটার কল ড্রপ হয়েছে ৭৪ কোটি ৬৭ লাখ ৮৪ হাজার। আর গত জুলাই শেষে রবির গ্রাহকসংখ্যা ছিল চার কোটি ৭৭ লাখ ৩৯ হাজার। অর্থাৎ গ্রাহকপ্রতি রবি আজিয়াটার কল ড্রপ হয়েছে ১৫ দশমিক ৬৪ বার। একই সময়ে গ্রামীণফোন গ্রাহকদের মোট কল ড্রপ হয়েছে ৭৯ কোটি ছয় লাখ ৮৭ হাজার। আর জুলাই শেষে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা ছিল সাত কোটি ৫৪ লাখ ৩৩ হাজার। অর্থাৎ গ্রাহকপ্রতি গ্রামীণফোনের কল ড্রপের সংখ্যা ১০ দশমিক ৪৮ বার।

এদিকে গত জুলাই শেষে বাংলালিংকের গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়ায় তিন কোটি ৪৭ লাখ ১৬ হাজার। আর এক বছরে বাংলালিংকের কল ড্রপ হয়েছে ২২ কোটি চার লাখ ৩৪ হাজার। অর্থাৎ বাংলালিংকের গ্রাহকপ্রতি কল ড্রপের সংখ্যা ছয় দশমিক ৩৫ বার।

এক বছরে টেলিটকের কল ড্রপ হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৫ লাখ ৮৪ হাজার। আর জুলাই শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত এ অপারেটরের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ৪২ লাখ ২৯ হাজার। অর্থাৎ গ্রাহকপ্রতি কল ড্রপের সংখ্যা ১২ দশমিক ৯১ বার। এ হিসাবে এক বছরে গ্রাহক অনুপাতে সর্বোচ্চ কল ড্রপ ছিল রবির। এর পর রয়েছে টেলিটক, গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক।

সূত্রমতে, কল ড্রপের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে অপারেটররা কিছু কল ফেরত দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে গত বছর এগিয়ে ছিল রবি আজিয়াটা। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের ফেরত দিয়েছে সাত কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার মিনিট। এ সময়ে গ্রামীণফোন ফেরত দিয়েছে ছয় কোটি ২২ লাখ ৪৯ হাজার মিনিট ও বাংলালিংক ফেরত দিয়েছে এক কোটি ৮৫ লাখ ৫২ হাজার মিনিট। তবে টেলিকট কল ড্রপের কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি।

বিটিআরসির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতি কলে একাধিকবার কল ড্রপের ঘটনাও ঘটছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের একের অধিক কল ড্রপ হয়েছে ১৮ কোটি ১১ লাখ ৩৩ হাজার, রবির ১৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ও বাংলালিংকের সাত কোটি আট লাখ ৯৬ হাজার। তবে টেলিটকের একের অধিক কল ড্রপের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে এক বছরে কল ড্রপের ৪৩ দশমিক ৬২ শতাংশই গ্রামীণফোনের। এ সময়ে ৪১ দশমিক ২০ শতাংশ কল ড্রপ ছিল রবির, ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ বাংলালিংকের ও তিন দশমিক শূন্য এক শতাংশ টেলিটকের।

গত বছর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের কল ড্রপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সে সময় কল ড্রপ নিয়ে অপারেটরগুলোকে চিঠি দিয়েছিল বিটিআরসি।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, গ্রাহকদের সেবার মান বাড়াতে ‘কোয়ালিটি অব সার্ভিস’ (কিউওএস) নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্ক ও দুর্বল নেটওয়ার্ক কাভারেজ, ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য, ভয়েস কলের নি¤œমান এবং গ্রাহকসেবার অসন্তুষ্টি দূর করা হবে। মোবাইলে কথা বলার (ভয়েস কল) সময় কল ড্রপের হার হতে হবে দুই শতাংশের কম। কোনো অপারেটর নীতিমালা উপেক্ষা করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশা করছি এই সেবাটি চালু হলে গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা প্রদান করা যাবে।