Print Date & Time : 22 September 2025 Monday 4:28 pm

গ্রীস্মকালীন পেয়াজ চাষে সফল যুবক রায়হান

প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক শতক জায়গায় গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ লাগিয়েছিলেন চাষি। চাষের উপযোগী জমি তৈরী করে মাত্র ৩০ গ্রাম বীজ ছিটিয়েছিলেন। সময়মত পানি দিয়েছেন, প্রয়োজন মতো দিয়েছেন প্রাকৃতিক সার। এখন তার জমিতে দেখা যাচ্ছে পেঁয়াজ গাছ। কম খরচ ও পরিশ্রম করে বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি তিনি। এখন রায়হানের দেখাদেখি তার প্রতিবেশীরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন পেঁয়াজ চাষে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার খলিলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা হয় গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষী রায়হান আহমেদ এর সাথে। খেত থেকে বড় বড় পেয়াজ সংগ্রহ করছিলেন।

শেয়ার বিজকে রায়হান বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের দিকে লালতীরের মাট কর্মীরা একদিন এসে বললেন গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষের কথা। বাড়ির পাশের প্রায় এক শতক জায়গা খালিই পড়েছিলো। মাটকর্মীরা পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতি ও হাইব্রিড বীজ দিলেন। আমি শুরু করলাম কাজ। পেঁয়াজের জন্য জমি প্রস্তুত করলাম। জমিতে বীজ ছিটিয়ে দিলাম। কিছুদিন যেতেই দেখি গাছের চারাগুলো উঠছে। গাছ বড় হলে ছত্রাক নাশক ছিটিয়ে দিলাম। এখন আমার প্রতিটি গাছে বড় বড় পেঁয়াজ ধরেছে। খেত থেকে পেঁয়াজ তুলে ওজন করে দেখি ৪ থেকে ৫ টায় এক কেজি হয়ে যায়। দেশী পেঁয়াজের মতো স্বাদ। যেহেতু একশতক জায়গায় করে আমি সফল হয়েছি এখন বড় জায়গা নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করবো।’

লালতীর সীড লিমিটেড এর ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী শেয়ার বিজকে বলেন, ‘সিলেট বিভাগে এর আগে বানিজ্যিক ভাবে গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষাবাদ হয়নি। আমরা শ্রীমঙ্গলের খলিলপুর গ্রামে একজন কৃষকে উদ্ভুদ্ধ করি পেয়াজ চাষে। লালতীর সিড লিমিটেড এর তিনটি জাতের (এলটি হাইব্রিড, বিজিএস ৪০৩ ও রেড হিল) পেঁয়াজের বীজ সরবরাহ করি। এরমধ্যে তুলনামূলকভাবে বিজিএস ৪০৩ ভালো ফলন এসেছে। আমরা মনে করি লালতীরের এই গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ যদি আমরা ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করি তাহলে আমাদের আর পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে এই পেঁয়াজ বড় ভুমিকা রাখবে।’

মি. তাপস বলেন, ‘অন্যান্য বিভাগে গ্রীস্মকালীন চাষাবাদ হলেও গত সেপ্টেম্বরে তারা সিলেট অঞ্চলের জন্য পরিক্ষামুলক চাষ শুরু করেছেন। এই বীজগুলো এক শতক জায়গায় ৩০ গ্রাম বীজ লাগে। প্রায় তিন মাস এর ভিতরে ফলন আসে। পেঁয়াজগুলো ১৫০-৩০০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় রোগবালাই কম ফলে কিটনাশক প্রয়োজন হয় না।’

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘যেহেতু সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশী হয়, সেই কারনে আমরা গ্রীস্মকালে পেঁয়াজ চাষাবাদ করতে পারি না। সরকারিভাবে ও লালতীর এর মাধ্যমে গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষাবাদে প্রনোদনা দেয়া হচ্ছে। যাতে আমরা গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ’টা বাড়াতে পারি। খলিলপুরে লালতীরের প্রদর্শনী মাঠে অনেক ভালো ফলন হয়েছে। আমরা চাই এটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক বিস্তার হোক। পেঁয়াজ অন্যান্য ফসলের থেকে লাভজনক এবং এর উৎপাদন খরচও অনেক কম।’