মোহাম্মদ আলমাস শিমুল: দেশ সাফল্যের দিকে এগোচ্ছে। পাঁচ-সাত বছর আগেও কারও ভাবনায় ছিল না এত অল্প সময়ে এত দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারবে। কেউ ভাবতেও পারেনি মানুষের গড় আয়ু এত দ্রুত বাড়বে, শিশুমৃত্যু হার কমবে, প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে সাত শতাংশ হবে, কিংবা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তিন হাজার কোটি ডলার অতিক্রম করবে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল পাঁচ হাজার মেগাওয়াট, সেখানে মাত্র ছয় বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। আগামী পাঁচ বছরে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়াবে ১৯ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। আমরা আগামী ১০ বছরে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের বাস্তব স্বপ্ন দেখছি। আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে আমাদের বার্ষিক বাজেট পাঁচ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করার স্বপ্ন দেখছি। কোনো দিক দিয়ে আমরা পিছিয়ে নেই, বরং অনেক ক্ষেত্রে ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের চেয়ে অগ্রগামী।
বিদেশিদের ধারণা ছিল আমরা কোনো বড় প্রকল্প তাদের আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া বাস্তবায়ন করতে পারব না, কিন্তু পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি এবং এলএনজি টার্মিনালের কাজ সমাপ্তির পথে।
হতাশার বিষয় হলো, তুলনামূলক বিচারে চট্টগ্রাম শিল্পায়নের দিক থেকে পিছিয়ে। একটি শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান (যোগাযোগ ব্যবস্থা, বন্দর, সস্তা শ্রমিক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ব্যাংক, বাজার প্রভৃতি) থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামে গত কয়েক বছরে হাতেগোনা কয়েকটি শিল্প স্থাপন ছাড়া তেমন নতুন শিল্প স্থাপিত হয়নি। অথচ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাঁচপুর ব্রিজ থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত, কাঁচপুর ব্রিজ থেকে নরসিংদী পর্যন্ত, টঙ্গী থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা পর্যন্ত এবং সাভার থেকে মানিকগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে অসংখ্য কারখানা গড়ে উঠেছে এবং নতুন কারখানা স্থাপিত হচ্ছে। চট্টগ্রামের যে শিল্পকারখানাগুলো এই অসম প্রতিযোগিতার কারণে টিকতে পারেনি, সেগুলো এখান থেকে গুটিয়ে ঢাকা বা অন্যান্য শিল্পাঞ্চলে স্থানান্তর করে বেশ ভালোভাবে ব্যবসা করছে। অনেকে কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। শুধু ইস্পাত খাতেই বন্ধ হয়ে গেছে অনেক কারখানা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নিউ এরা স্টিল, মির্জা আবু স্টিল, দৌলতপুর স্টিল, জিএম স্টিল, চিটাগাং ইন্ডাস্ট্রি, স্প্রিং স্টিল, জেনারেল স্টিল, ক্রাউন স্টিল, টিকে স্টিল, গাউছে পাক স্টিল, ইউনাইটেড স্টিল, জিলানী স্টিল, চট্টলা স্টিল, এইচ স্টিল, স্যামসন স্টিল, মজিদ স্টিল, সালেহ জরিনা স্টিল প্রভৃতি।
চট্টগ্রামে উৎপাদিত শিল্পজাত পণ্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে সরবরাহ হয়ে থাকে। সেখানে একটি স্থায়ী ভ্যাট তল্লাশি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ওই ভ্যাট তল্লাশি কেন্দ্রে চট্টগ্রামে উৎপাদিত সব পণ্যের শতভাগ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। পরিশোধ করতে হয় আনুপাতিক হারে শতভাগ গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল ও আয়করও। এতে চট্টগ্রামে পণ্য উৎপাদনে খরচ বেশি হয়। দেশের অন্য কোথাও স্থায়ীভাবে ভ্যাট তল্লাশি কেন্দ্র না থাকায় ওই অঞ্চলে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ থেকে যায়। ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া গেলে আনুপাতিক হারে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও আয়কর ফাঁকি দেওয়াও সহজ হয়। তবে উদ্যোক্তারা ওই ভ্যাট তল্লাশি কেন্দ্র তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নন।
এ সমস্যার সমাধানে ঢাকার হাসনাবাদ, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মাহাসড়কের মেঘনাঘাট, নরসিংদীর বাবুবাজার, সাভারের নবীনগর, গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, ত্রিশাল, কুমিল্লার ময়নামতী প্রভৃতি স্থানে ভ্যাট তল্লাশি কেন্দ্র স্থাপন করলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। চট্টগ্রামের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন খরচের সমতা আসবে এবং ব্যবসায়ীরা সমতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা করবে। ফলে নতুন শিল্প স্থাপিত হবে।
চট্টগ্রামের বড় দারোগা হাটে গাড়ির ওজন পরিমাপক যন্ত্র স্থাপনের কারণে চট্টগ্রামের উৎপাদিত পণ্যের যানবাহন ১৩ টনের বেশি পণ্য বহন করতে পারে না। অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের কারণে প্রতি টনে ৩০০-৫০০ টাকা বকশিশ হিসেবে দিতে হয়। ১৩ টনের বেশি পণ্য পরিবহন করতে পারে না বলে পরিবহন খরচ বেশি হয়। ফলে গ্রাহক বা সাধারণ ডিলার বা পাইকাররা চট্টগ্রাম থেকে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বাজারজাত করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। অথচ এ ধরনের পরিমাপক যন্ত্রের ব্যবহার না থাকায় ঢাকা বা আশপাশের শিল্পাঞ্চলে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী স্বচ্ছন্দে ৩০ টন, ৩৫ টন বা ৪০ টন পরিবহন করছে। ফলে চট্টগ্রামের উৎপাদিত পণ্য প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাচ্ছে। সব শিল্পাঞ্চলের মূল সড়কে ওজন পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন করলে রাস্তার মান ভালো থাকবে।
পানির অভাবে চট্টগ্রাম শিল্পাঞ্চলে নতুন কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে না, বরং যারা আছে, তারাও অন্যত্র স্থানান্তর করার উদ্যোগ নিচ্ছে। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের করা ভূতাত্ত্বিক জরিপমতে, ভূগর্ভস্থ পানির সংস্থান খুবই নাজুক। এখনও কোনো কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ১২০০-১৩০০ ফুট গভীরেও পানির স্তর খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্যান্য শিল্পাঞ্চলে এক থেকে তিনটি গভীর নলকূপ দিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো পানির চাহিদা মিটাচ্ছে। অথচ সীতাকুণ্ড অঞ্চলে ৪০-৫০টি গভীর নলকূপ বসিয়েও প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। ভূগর্ভস্থ পানির অধিক ব্যবহারে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে এবং ভূমিকম্প ও ভূমিধস হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ কুমিরা ইউনিয়ন পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শিল্পকারখানাগুলো দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করে কারখানার পানির চাহিদা মেটায়, অথচ পাহাড়ে বসবাসরত ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন সুপেয় পানির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পানির অভাবে এ এলাকায় জুমচাষ ও কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
এলাকার পানির তীব্র সংকট নিরসনকল্পে সর্বোপরি শিল্পকারখানার পানির চাহিদা পূরণের জন্য পাহাড়ে ছোট ছোট ছড়াগুলোয় বাঁধ নির্মাণ করে বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পানির জলাধার নির্মাণ করলে পানি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। ওই এলাকাগুলোয় জলাধার নির্মিত হলে শিল্পায়নের জন্য পানি সরবরাহ ছাড়াও নিকটবর্তী কৃষিজ জমিতে পানি সরবরাহ করে অধিকহারে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়ে উঠবে। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোয় বনায়ন, মৎস্য উৎপাদন করলে আমিষের সরবরাহ ও বেশ কিছু লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এতে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে উঠবে। এতে সরকার ও জনস্বার্থের কোনো ক্ষতি হবে না, বরং সীতাকুণ্ডের অন্যান্য শিল্পাঞ্চল নতুন প্রাণ পাবে। সরকারের সহযোগিতা পেলে এলাকার শিল্পকারখানার মালিকরা যথাসম্ভব কম সময়ে ওই ছড়াগুলোয় বাঁধ নির্মাণ করতে পারেন। এতে পানির সমস্যার সমাধান
করা সম্ভব হবে।
গ্যাসের স্বল্পতা চট্টগ্রামে শিল্পায়নের একটি বড় অন্তরায়। আশির দশকে মাত্র ২৪ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের পাইপলাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। ওই ২৪ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের পাইপলাইন নির্মাণ করার সময় এর আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ বছর এবং পরিকল্পনা ছিল ২৫ বছরের মধ্যে আরও তিনটি সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হবে। সেগুলো হবে যথাক্রমে ২৪ ইঞ্চি, ৩২ ইঞ্চি ও ২৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের এবং পাশাপাশি সাঙ্গু গ্যাস ফিল্ড ও সেমুতাং গ্যাস ফিল্ড তো থাকছেই। চট্টগ্রামের জন্য বড়ই দুঃখের বিষয় যে, নতুন করে আর কোনো সঞ্চালন পাইপলাইনই তো হয়নি, অধিকন্তু মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা সাঙ্গু গ্যাস ফিল্ড চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। সেমুতাং থেকে যতটুকু গ্যাস পাওয়ার স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল তার সিকি ভাগও পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা চট্টগ্রামবাসী বড়ই দুর্ভাগা। এত কিছুর মাঝেও প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে চট্টগ্রামের শিল্পকারখানায় গ্যাস ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা আসে। সব শিল্পকারখানার গ্যাস সংযোগ বন্ধ রেখে শুধু সার উৎপাদনের জন্য গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের শিল্পকারখানাগুলো প্রতিদিন ১২ ঘণ্টার বেশি উৎপাদন চালু রাখতে পারে না। অথচ ঢাকা বা অন্যান্য শিল্পাঞ্চলে ২৪ ঘণ্টা উৎপাদন বজায় থাকে বলে তাদের উৎপাদন খরচ আমাদের চেয়ে অনেক কম হয়। ফলে চট্টগ্রাম অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। গত সাত-আট বছরে নতুন করে শিল্পকারখানায় কোনো গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়নি। যার দরুন পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকা স্বত্ত্বেও নতুন করে শিল্প গড়ে ওঠা তো দূরে থাক, গ্যাসের অভাবে চট্টগ্রামে শিল্প সম্প্রসারণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অথচ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা, গাজীপুর, ময়মনসিংহের কিছু অংশ ও মানিকগঞ্জের কিছু অংশে গ্যাস অতিসহজ ও সুলভ। ওই শিল্পাঞ্চলগুলোর জন্য একাধিক গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন রয়েছে। উল্লিখিত অঞ্চলে গ্যাস আমাদের মতো নিষিদ্ধ নয়, বরং সহজপ্রাপ্য।
প্রধানমন্ত্রীর ওপর শিল্পোদ্যোক্তরা ভরসা করে আছেন। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, ২০১৮ সালের মধ্যে এলএনজি সরবরাহ করে চট্টগ্রামে শিল্পের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা হবে। এর কাজ দ্রুত চলছে। ২০১৮ সালের মধ্যে অবশ্যই সব শিল্পের কাজে এলএনজি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় অনেককে কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের প্রধান সূতিকাগার এবং দেশের রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস। চট্টগ্রাম বন্দরের কারণে চট্টগ্রাম শহর গড়ে উঠেছে এবং এ বন্দরের কারণেই দেশে-বিদেশে চট্টগ্রামের এত গুরুত্ব। অতএব চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে কারও সঙ্গে আপস করা সমীচীন হবে না। সমগ্র দেশ যেভাবে দ্রুততম অগ্রগতির পথে ধাবিত হচ্ছে, সে হারে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্ষমতা বাড়েনি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে শিল্পের কাঁচামাল বা যন্ত্রাংশ সরবরাহ নিতে ৩০-৪৫ দিন সময় লাগছে, যার দরুন কাঁচামালের আমদানি খরচ অপ্রত্যাশিতভাব বেড়ে যাচ্ছে। মংলা বন্দর দিয়ে যে কোনো পণ্য সামগ্রী দ্রুত ও স্বল্প শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে খালাস নেওয়া সম্ভব। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি এবং অন্যান্য বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানির মধ্যে সরকারি শুল্কের যে তারতম্য রয়েছে, তা চট্টগ্রামের শিল্পায়নে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।
খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্ষমতা বাড়াতে হবে। উন্নত বিশ্বের মতো প্রাইভেট পোর্ট নির্মাণের অনুমোদন দিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে নতুন পোর্ট বা বন্দর নির্মাণ করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে অন্যান্য বন্দরের শুল্ক ও করের তারতম্য নিরসনকল্পে শুল্ক সমতা আনতে হবে।
বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রামকে একাধিকবার বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ এ বিষয়ে দাফতরিক কোনো পদক্ষেপ আজও নেওয়া হয়নি। ছোটখাটো কাজ থেকে শুরু করে বড় যেকোনো কাজের জন্য রাজধানীতে যেতে হয়। এতে সময় ও খরচ বৃদ্ধি পায়, যা শিল্প উন্নয়নে প্রতিবন্ধক। এ সমস্যা সমাধানে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা যেতে পারে। প্রয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের মতো চট্টগ্রাম উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা যেতে পারে।
বর্তমানে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি বা লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আছে। এটি বর্তমান সরকারের একটি বড় সাফল্য। চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানে প্রশাসন আন্তরিক। তাই আশা করা যায়, নীতিনির্ধারকরা বর্ণিত বিষয় বিবেচনায় এনে সমাধানে সচেষ্ট হবেন। চট্টগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প উন্নয়নে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত খুবই জরুরি। চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রশ্নে এ অঞ্চলের রাজনীতিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। এতে উদাসীন থাকা মানেই নিজের পায়ে কুড়াল মারা। অন্তর থেকে উপলব্ধি করে উদ্যোগ নিলে ওই সম্যসাগুলোর সমাধান খুবই সহজেই সম্ভব।
সমগ্র দেশ যেখানে অগ্রগতি লাভ করছে, সেখানে সাধারণত গ্যাস, পানি, ভ্যাট তল্লাশি কেন্দ্র, ওজন পরিমাপক যন্ত্র প্রভৃতির কারণে কেন চট্টগ্রাম পিছিয়ে থাকবে? দলমত নির্বেশেষে আপামর সবার উচিত চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে আন্তরিকতার সঙ্গে ওই সমস্যাগুলো সমাধানে এগিয়ে আসা। এতে চট্টগ্রামের ন্যায্য স্বার্থ সংরক্ষিত হবে এবং দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং অব্যাহত রাখতেই হবে।
অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক
জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড, চট্টগ্রাম