নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: নির্ধারিত সময়ে আপেল আমদানিকারকেরা খালাস করে নিলে ৫৫ লাখ টাকা শুল্ক-কর পেত সরকার। নির্ধারিত সময় অতিক্রম করায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চীন থেকে আমদানিকৃত আপেল নিলামে বিক্রি করে অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণ করে ১৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। গত মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় কাস্টমস নিলাম হলে তিন মাস ধরে পড়ে থাকা আপেল ঘণ্টাব্যাপী প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি হয়। এ নিলামে অংশ নেন ১০০ জন দরদাতা।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের মে মাসে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আজিজিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড তিনটি চালানে চীন থেকে ১৫৬ টন আপেল আমদানি করে। নির্ধারিত ৪৫ দিনের মধ্যে খালাস না করে নেওয়ায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আহরণ করতে পারেনি ৫৫ লাখ টাকা। ফলে নিয়মানুসারে নিলামে তোলা ছয় কনটেইনার আপেল নিলামে বিক্রি হয়েছে ৭১ লাখ ৮৫ হাজার টাকায়। এতে অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণ হবে ১৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
কাস্টম হাউজের পক্ষে চুক্তিবদ্ধ নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মো. সাহেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে চীন থেকে আমদানি করা ক্যাটালগের ১-এ থাকা ৫২ হাজার ১৮৪ কেজি আপেল (দুই কনটেইনার) দিয়ে নিলাম শুরু হয়। এই দুটি কনটেইনার ২১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোড এলাকার এমদাদ উল ইসলাম ক্রয় করেন। তিনি তাৎক্ষণিক দুই লাখ ১৩ হাজার টাকা জামানত হিসেবে নগদ পরিশোধ করেন। এরপর ক্যাটালগের ২-এ থাকা সমপরিমাণ আপেল ক্রয় করেন পূব মাদারবাড়ী মাঝির ঘাট রোড এলাকার রফিক ইসলাম। তিনি দুই কন্টেইনার আপেল কেনেন ২৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। নগদ জামানত প্রদান করেন দুই লাখ ৫৩ হাজার টাকা। একইভাবে ক্যাটালগের ৩-এ থাকা সর্বশেষ কন্টেইনার দুটি ৫২ হাজার ১৮৪ কেজি আপেল ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন নিমতলা আবদুল লতিফ সড়ক এলাকার শফিকুল ইসলাম মাসুম। তিনি নগদ জামানত প্রদান করেন দুই লাখ ৫২ হাজার টাকা।
নিলামদর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিলামে প্রতি কেজি আপেলের দর ওঠে ৪০ থেকে ৪৮ টাকা পর্যন্ত। কেজিপ্রতি ৪৮ দশমিক ৫৮ টাকা দর দিয়ে ৫২ হাজার ১৮৪ কেজি আপেলের একটি চালানে সর্বোচ্চ
দরদাতা হয়েছেন রফিক ইসলাম। আবার কেজিপ্রতি ৪৮ টাকা দর দিয়ে সমপরিমাণ আরেকটি চালানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছেন শফিকুল ইসাল মাসুম নামে এক ব্যক্তি। আর সর্বনিম্ন ৪০ টাকা দরে ৫২ হাজার ১৮৪ কেজি আপেল কেনেন ঢাকার এমদাদ উল ইসলাম। নিলামে অংশগ্রহণকারী একাধিক দরদাতা বলেন, নিলামে তোলা আপেলের মান ভালো ছিল, তাই দরও বেশি উঠেছে।
কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (নিলাম) মো. আহসান উল্লাহ শেয়ার বিজকে বলেন, রাজস্বক্ষতি কমাতে নিয়ম অনুযায়ী বরাবরের মতো ছয় কনটেইনার আপেল নিলামে তোলা হয়েছে। এতে ৭১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে, যেটা আমদানিকারক সময়মতো খালাস করলে সরকার রাজস্ব পেত ৫৫ লাখ টাকা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতাদের কাছে আপেল বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে নিলামযোগ্য কনটেইনারগুলোও নিলাম করা হবে। এতে রাজস্ব অনাদায়গুলো আদায় হবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যবাহী নিলামযোগ্য কনটেইনার আছে পাঁচ হাজার ৬৮৭টি।