চট্টগ্রাম বন্দরের মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৩৯ শতাংশ

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম দিয়ে বাড়ছে আমদানি-রফতানি। প্রতি বছর এ বন্দরের জাহাজ, কনটেইনার, কার্গো হ্যান্ডেলিং বাড়ছে। আগের বছরের তুলনায় জাহাজ হ্যান্ডেলিংয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ, কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ে ৯ শতাংশ এবং কার্গোতে প্রায় ১৩ শতাংশ। গত কয়েক বছর প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের চলতি বছরের ১১ মাসে নিট মুনাফা বেড়েছে ৩১২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের (সাময়িক হিসাবে) বন্দরের নিট মুনাফা ছিল ৭৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে (অনিরীক্ষিত হিসাব) পর্যন্ত হয়েছে এক হাজার ১০৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। যা শতাংশ হিসেবে প্রবৃদ্ধি ৩৯ শতাংশেরও বেশি।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম দিয়ে বাড়ছে আমদানি-রফতানি। প্রতি বছর এ বন্দরের জাহাজ, কনটেইনার, কার্গো হ্যান্ডেলিং বাড়ছে। গত ২০১৮ সালে এ বন্দরের জাহাজ হ্যান্ডেলিং ছিল তিন হাজার ৭৪৭টি। যা আগের বছরের ছিল তিন হাজার ৩৭০টি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে জাহাজ খালাস বেড়েছে ৩৭৭টি। একই বছরের বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলি ছিল ২৯ লাখ তিন হাজার টিইইউএস। যা আগের বছরের ছিল ২৬ লাখ ৬৭ হাজার টিইইউএস। ২০১৮ সালে সাধারণ কার্গো হ্যান্ডেলিং ছিল ৯ কোটি ৬৩ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় জাহাজ হ্যান্ডেলিংয়ে প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশ, কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ে ৯ শতাংশ এবং কার্গোতে প্রায় ১৩ শতাংশ। আর প্রতি বছর প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের চলতি বছরের ১১ মাসে নিট মুনাফা বেড়েছে ৩১২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের (সাময়িক হিসাবে) বন্দরের নিট মুনাফা ছিল ৭৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে (অনিরীক্ষিত হিসাব) পর্যন্ত হয়েছে এক হাজার ১০৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। যা শতাংশ হিসেবে প্রবৃদ্ধি ৩৯ শতাংশেরও বেশি।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলেন, প্রতি বছরই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বেড়ে চলেছে কনটেইনার ও পণ্য পরিবহন। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে মূলধনি যন্ত্রপাতি, শিল্প-কারখানার কাঁচামাল ও গৃহস্থালি পণ্য সবকিছুই এখন আমদানি হচ্ছে কনটেইনারে। রফতানি পণ্যের প্রায় পুরোটাই যাচ্ছে কনটেইনারে। এ কারণে কনটেইনারে আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহনের প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাকসহ শিল্পের প্রসার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। আবার প্রতিবেশী দেশগুলোর ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্টের বিষয়টিও সামনে আসছে। সবকিছু মিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ে, এমন বড় প্রকল্পে বিনিয়োগে নজর দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে আয়। আর চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো বিকল্প নাই। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন আওতা বাড়ছে। পাশাপাশি চলমান প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ হলে সব মিলিয়ে আগের চেয়ে মুনাফা বাড়বে।
সম্প্রতি এক আলাপে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে বিজনেস ফ্রেন্ডলি পোট গড়তে অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে সাউথ কনটেইনার ইয়ার্ড নিমাণ, ওভারফ্লো ইয়ার্ড চালু, কর্ণফুলী ড্রেজিংয় কাজ, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে কাজ, এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০টির বেশি বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়। এতে বন্দরের বহির্নোঙরের জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় কমেছে। এতে বেশি জাহাজ ভিড়তে পারছে। সব মিলিয়ে কনটেইনার পরিবহনে গতিশীলতাও বেড়েছে। আর এতে দেশের আমদানি ও রফতানি কার্যক্রম আরও গতিশীল হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের আমদানি-রফতানির ৯২ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে হয়। ১৯৮৬ সালে বন্দরের বিভিন্ন সেবা মাশুল গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। সে সময় চট্টগ্রাম বন্দরে ৬০ ধরনের ট্যারিফ চালু করা হয়। পরে ২০০৮ সালে অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পাঁচটি সেবার ট্যারিফ বাড়ানো হয়।