চামড়া শিল্পকে উন্নত করতে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক: চামড়া শিল্পকে উন্নত করতে হলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাই বিদেশিদের পাশাপাশি দেশীয় বিনিয়োগকারীদের চামড়া শিল্পে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ‘লেদার-টেক বাংলাদেশ-২০২২’র অষ্টম আসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার ১০০ ইকোনমিক জোন চালু করেছে। তাই আমরা বিদেশি ইনভেস্টরদের উৎসাহিত করছি। যাতে তারা দেশের চামড়া খাতে ইনভেস্ট করেন। আমরা বিশ্বাস করি ভালো ইনভেস্টমেন্ট থাকলে আমাদের চামড়া খাতে উৎপাদন যেমন বুস্ট হবে। একই সঙ্গে অনেক নতুন উদ্যোক্তারা এ সেক্টরে যুক্ত হবেন। এ খাতে রপ্তানি আরও বাড়াতে চাইলে ইনভেস্টরের প্রয়োজন আছে। 

আগামীতে দেশের চামড়া শিল্পে অনেক ভালো সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি আগামীতে চামড়া শিল্প আমাদের অর্থনীতিতে গার্মেন্টস শিল্পের চেয়ে ভালো অবদান রাখবে। আমরা চেষ্টা করছি চামড়া শিল্পের রপ্তানি আয় ২০৩০ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলার থেকে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার। চলতি বছরে চামড়া শিল্পে রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আসক ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন্স প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক নন্দা গোপালকে। তিনি বলেন, প্রায় তিন বছর পর হলেও এবারের প্রদর্শনী চামড়া জাত শিল্পের মেশিনারি, কম্পোনেন্টস, অ্যাক্সেসরিজ, ডাইস এবং কেমিক্যালস সরবরাহকারীদের জন্য অনেক গুরুত্ব বহন করবে। লেদার টেক বাংলাদেশ গত বছরগুলোতে চামড়া শিল্পের নেটওয়ার্কিং ফোরাম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। 

লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, চামড়া শিল্পে বিশ্বের যত আধুনিক প্রযুক্তি আছে তা বাংলাদেশে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য থেকে এ প্রদর্শনীর আয়োজন। এর ফলে যারা রপ্তানিকারক আছে তাদের সক্ষমতা বাড়বে আর নতুন যারা এ সেক্টরে আসতে চাচ্ছেন তারা এক ছাদের নিচে এ সেক্টরের সব তথ্য পাবেন। চামড়া শিল্পকে যদি আরও শক্তিশালী করতে হয় তাহলে সাপ্লাই চেইনদের দেশে আনতে হবে। কাঁচামালগুলো হয় তারা স্টক করবে অথবা ভবিষ্যতে দেশে উৎপাদন করবে। তাহলে আমরা বিশ্বে ভালো অবস্থানে থাকতে পারব।

তিনি বলেন, চায়না ও ভিয়েতনামে করোনার লকডাউনের কারণে তাদের মার্কেট বন্ধ। তাই বিশ্বের নামিদামি বায়ারদের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। যা আমাদের এ লেদার সেক্টরকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলবে। এখনই বাংলাদেশের সময় চামড়া শিল্পকে আরও উন্নত মানের করা। পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানো। আমরা সস্তা প্রডাকশন চাই না, ভালো মানের প্রোডাক্ট চাই।

তিন দিনব্যাপী এ ট্রেড শোতে ১০ দেশের প্রায় ২০০ প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের চামড়া, চামড়াজাত পণ্য এবং ফুটওয়্যার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারি, কম্পোনেন্ট, কেমিক্যাল এবং অ্যাক্সেসরিজ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রযুক্তি তুলে ধরা হয়। এ এক্সপো চলবে শুক্রবার ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উš§ুক্ত থাকবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির (বিপিপিএস) সভাপতি হাজী মো. শাহীন খান, ইন্ডিয়ান ফুটওয়্যার কম্পোনেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইফকোমা) ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এরিক ইল্লিক, বাংলাদেশ টেনার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর প্রমুখ।