প্রতিনিধি, শেরপুর : শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের পূর্বকুমরী কমিউনিটি ক্লিনিক চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৪৮টি গর্ভবতী মায়েদের নরমাল ডেলিভারি করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে রেকর্ড গড়েছন।
শেরপুর সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত পূর্ব কুমরী কমিউনিটি ক্লিনিকের যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হওয়া সত্ত্বেও ক্লিনিকটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ওই কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইসসিপি) মো. মোজাম্মেল হক জানান, এ ক্লিনিক থেকে বছরে প্রায় ১২ হাজার লোক স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকে। রোগীদের মধ্যে ২৭ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। ক্লিনিকটি জনপ্রিয় হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে প্রতি মাসে ৯-১০টি গর্ভবতী মায়েদের নরমাল ডেলিভারি করানো হয়। এটি বাজিতখিলা ইউনিয়নের এ প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
পরিবার কল্যাণ সহকারী ছালমা খাতুন জানান, প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০টি রোগীর নরমাল ডেলিভারি করছি। শুধু তা-ই নয়, যেহেতু আমার বাড়ি ক্লিনিকসংলগ্ন, তাই ২৪ ঘণ্টায় রোগীরা সেবা পেয়ে থাকে। সিএইচসিপি আরও জানান, ক্লিনিকটির সীমানা প্রাচীর না থাকার ফলে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।
পূর্বকূমরী ইউপি মেম্বার ও কমিউনিটি ক্লিনিক সভাপতি সামছুল হক জানান, আমাদের এ ক্লিনিকটি শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী সেবা নিয়ে থাকে। এর কারণ হচ্ছে এ ক্লিনিকটি পরিচালনা করার জন্য ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিউনিটি গ্রুপ একটি কমিটি রয়েছে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নিয়ে প্রতি মাসে একবার করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মাসিক সমন্বয় সভা করে থাকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি উদ্যোগের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক একটি অন্যতম। আমরা শেরপুর জেলার শ্রেষ্ঠ ক্লিনিক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছি।
সুবিধাভোগী নাইফুল খাতুন বলেন, ৬ মাস আগে আমার প্রসব ব্যথা শুরু হলে তাৎক্ষণিক রাতের বেলায় আমার পরিবার এ ক্লিনিকে নিয়ে আসে এবং আমাকে পরিবার কল্যাণ সহকারী ছালমা খাতুন নরমাল ডেলিভারি করিয়ে দেয়। এতে করে আমার কোনো টাকা পয়সা লাগেনি। এ ক্লিনিক চালু হওয়ার ফলে আমাদের কয়েকটি গ্রামের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হয়েছে।
পূর্বকুমরীর একজন কৃষক রাশেদ খান জানান, এ ক্লিনিক থেকে আমরা যেভাবে সেবা পাচ্ছি তাতে আমাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে হয় না।
শেরপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মোবারক হোসেন বলেন, শেরপুর সদর উপজেলায় ৫৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে পূর্বকুমরীর ক্লিনিকটি অন্যতম। যার ফলে এ ক্লিনিকটি জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যে ক্লিনিকগুলোতে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি শক্তিশালী সেখানে মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছে। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম একটি উদ্যোগ কমিউনিটি ক্লিনিককে আরও এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।