চালু হবে বলেও চালু হয়নি কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: এক বছর ধরে বলা হচ্ছে দেশে বাজারের কৃষিপণ্য, জ্বালানি তেল ও মেটাল বেচা-বিক্রির মাধ্যম হিসেবে কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ চালু হবে। এটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একাধিক কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশে একটিও চালু হয়নি। এমন এশিয়ার ছোট দেশ নেপালে একাধিক কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ আছে।

জানা যায়, এশিয়ায় ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপালসহ আসিয়ানভুক্ত বিভিন্ন দেশ ও উন্নত বিশ্বে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অনেকদিন ধরেই রয়েছে। এসব এক্সচেঞ্জ ভালোভাবেই পারফর্ম করছে। কিন্তু বাংলাদেশে কমোডিটি ইকোসিস্টেম নেই। বর্তমানে দেশের ১৫০ বিলিয়ন ডলারের কমোডিটি লেনদেন হয়। ফলে দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের উপযোগিতা রয়েছে। এর জন্য দেশে একটি পরিপূর্ণ কমোডিটি কাঠামো গড়ে তুলার মাধ্যমে ফিউচার কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে কৃষি, শিল্প কিংবা ভোগ্যপণ্যভিত্তিক কমোডিটি পণ্য বেচাকেনা বিষয় নিয়ে কাজ করছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো পণ্য বেচাকেনার জন্য কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সিএসই। এটি স্টক এক্সচেঞ্জেরই একটি ভিন্ন রূপ হবে, যেখানে পণ্য লেনদেন হবে। এ জন্য পরামর্শ সেবা নিতে ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের (এমসিএক্স) সঙ্গে চুক্তি করেছে সিএসই। এখানে বিভিন্ন ধরনের বিধি ও প্রবিধান তৈরি করা হচ্ছে। পণ্য শনাক্তকরণ, ব্যবসায়িক পরিকল্পনার উন্নয়ন, পণ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে বাজার নজরদারি কাঠামো গড়ে তোলার জন্য নানা কাজ করা হচ্ছে। এ ইকো সিস্টেমের বিএসইসি, ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, গুদামজাতকারী, কৃষকদের সংগঠন, সিসিবিএল, ব্রোকার, বিমা কোম্পানি, বিনিয়োগকারী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পাইকারি ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, প্রক্রিয়াকারীরাই কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মূল অংশগ্রহণকারী হবেন।

বাজারের সরবরাহ সংকট, রমজান কিংবা কোনো বিশেষ উৎসবকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা যায়। দেশে এসব পণ্যের চাহিদা, সরবরাহ ও উৎপাদন সংক্রান্ত পরিপূর্ণ তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণেও কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সরবরাহ ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে তখন বাজারের ভারসাম্য থাকবে। বিদ্যামান  তথ্যপ্রযুক্তির যে অবকাঠামোগত সুবিধা রয়েছে, সেটিকে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রসারের জন্য যথেষ্ট। এর মাধ্যমে একজন উৎপাদক আগে থেকেই নিশ্চিত হতে পারবেন যে, তার উৎপাদিত পণ্যের একজন ক্রেতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দামও নির্দিষ্ট করা থাকবে।

 সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম ফারুক শেয়ার বিজকে বলেন, কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য নীতিমালা ও আইন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সফটওয়্যারসহ অবকাঠামো তৈরি কাজ চলছে। আশা করছি, আগামী মার্চে আমরা চালু করতে পারব। প্রাথমিকভাবে দেশে তুলা, ভোজ্যতেল, গম ও স্বর্ণের মতো কমোডিটি পণ্য লেনদেন হবে। এছাড়া পাট, সিমেন্ট, লোহা বেশি সম্ভাবনাময়। তবে এটি পরিবর্তনও হতে পারে।