নিজস্ব প্রতিবেদক : কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন তার বোন সেলিমা ইসলাম। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখে এসে এ কথা বলেন তিনি।
সেলিমা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) শরীর খুবই খারাপ। পা বেঁকে গেছে। তিনি চলতে পারছেন না, শুয়ে থাকতেও তার কষ্ট হচ্ছে, আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠাতে চাই।’
খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চান কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘উনি বলেন নাই। আমরাই বিদেশে পাঠাতে চাচ্ছি। কারণ এখানে (বিএসএমএমইউ) তো যে চিকিৎসা দিচ্ছে এতে কিছুই হচ্ছে না। বরং দিনের দিন খারাপ হচ্ছে।’
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে আর্থ্রাইটিসসহ বয়সজনিত বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য গত ১ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে রাখা হয়েছে।
এ হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সুষ্ঠু চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ করে তাকে ঢাকার কোনো বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
তবে মন্ত্রীরা বলছেন, জামিন দেওয়া না দেওয়া আদালতের বিষয়। এখানে সরকারের ‘কিছু করার নেই’।
৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়া এখন ‘উঠতে ও বসতে পারেন না’ জানিয়ে তার বোন সেলিমা বলেন, ‘নিজের হাতে তুলেও খেতে পারেন না, কিছুই করতে পারেন না।’ শুক্রবার চিকিৎসকরা এসেছিলেন কি নাÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা দুই সপ্তাহ ধরে আসছেন না। তারা আসেনই না। কোনো কিছু চিকিৎসাও দেন না। তাহলে অযথা এখানে ফেলে রাখছেন কেন? আমরা উন্নত চিকিসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে চাই।’
জামিন না প্যারোলে, কোন উপায়ে যেতে চান প্রশ্ন করা হলে সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘উনারা যদি জামিন দেন তাহলে উনি যেতে পারবেন।’
সেলিমা ইসলাম ছাড়াও খালেদার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও তার ছেলে অভিক এস্কান্দার এবং তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দু, প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের ছেলে অতনু এস্কান্দর ও তার ছেলেসহ ছয়জন বেলা সাড়ে ৩টায় হাসপাতালে কেবিন ব্লকে আসেন। প্রায় সোয়া একঘণ্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ পান তারা।
পরে বেরিয়ে স্বজনরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারসহ ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।