Print Date & Time : 3 August 2025 Sunday 10:53 am

চীনের বয়কটে শঙ্কায় দক্ষিণ কোরিয়ার পর্যটনশিল্প

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী পদক্ষেপের কারণে সম্প্রতি চীনা পর্যটক গ্রুপের দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে বেইজিং। আর এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির পর্যটনশিল্পে। কোরিয়া পর্যটন সংস্থা (কেটিও) জানিয়েছে, চলতি বছর পর্যটক আগমনের হার আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ নিয়ে শঙ্কায় আছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। খবর বিবিসি।

কেটিও’র তথ্যমতে, চলতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় পর্যটক আগমনের সম্ভাব্য সংখ্যা চার দশমিক সাত মিলিয়ন। আগের বছরের তুলনায় এটি ২৭ শতাংশ কম। গত বছর দেশটিতে ভ্রমণকারী পর্যটকের ৪৬ দশমিক আট শতাংশই ছিল চীনের। এবার বয়কটের কারণে তাই বড় ধরনের পর্যটন ঘাটতি হবে।

কোনো দেশ চীনের রাজনৈতিক দর্শনের অবমাননা করলে শাস্তি হিসেবে সে দেশের পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বেইজিং। তবে শুধু আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ নয়, অনেক ক্ষেত্রে দেশগুলোতে চীনা পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেও ক্ষতি করে দেশটি। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর এ অস্ত্রই ব্যবহার করছে দেশটি।

কেটিও’র মতে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে পর্যটক আগমনে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু চীনের নিষেধাজ্ঞার পর তা ক্রমাগত কমছে।

মে মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় পর্যটক আগমনের সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৩৪ দশমিক পাঁচ শতাংশ। ২০১৫ সালের মার্স মহামারির পর এটিই পর্যটক আগমনের সবচেয়ে কম সংখ্যা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেটিও’র এক কর্মকর্তা বলেন, পর্যটন আগমনের বর্তমান প্রবণতা নিয়ে আমরা খুবই শঙ্কায় রয়েছি।

এতে শুধু পর্যটন খাতই নয়, রিটেইল জায়ান্ট লোটে গ্রুপের শুল্কমুক্ত দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিতর্কিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় জমি প্রদানের জন্য চীনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে লোটে গ্রুপ। চীনে লোটে গ্রুপের বেশ কিছু দোকান বন্ধ করা হয়েছে।

আকাশসেবাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে। মার্চে বেশ কিছু আকাশসেবা সংস্থা চীন-দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সেবা বন্ধ করার কথা জানায়। এর চাপ পড়তে শুরু করেছে এ খাতের আয়ের ওপর।

চীনা কর্তৃপক্ষের দক্ষিণ কোরিয়ায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরোপিত প্রতিবন্ধকতা আকাশসেবা সংস্থাসহ ভ্রমণ সংস্থা, প্যাকেজ ট্যুর অপারেটরস ও ক্রুজের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপের হিসাব অনুসারে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর  লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার। স্থানীয় ভ্রমণ সংস্থাগুলোকে ১৫ মার্চ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণ প্যাকেজ বিক্রি বন্ধের জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে চীনা ন্যাশনাল ট্যুরিজম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। প্রতিবছর কয়েক লাখ চীনা দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণ করেন। গত বছর ৮০ লাখের বেশি চীনা দেশটিতে ভ্রমণ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার রিসোর্ট দ্বীপ জেজুর ৮৫ শতাংশ পর্যটক চীন থেকে আসেন।

উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি সঞ্চয়ের প্রতিক্রিয়ায় সম্ভাব্য আক্রমণ রোধে দক্ষিণ  কোরিয়ায় একটি ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী ব্যবস্থা স্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।