শেয়ার বিজ ডেস্ক: কভিডের ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ এবং আকস্মিক বন্যার ফলে চীনে জুলাই মাসে শিল্পোৎপাদন এবং খুচরা বিক্রি প্রত্যাশার চেয়েও কম হয়েছে। গতকাল সোমবার দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো এ তথ্য প্রকাশের পর বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম কমে গেছে। এদিকে একই কারণে এশিয়ার পুঁজিবাজারেও ধস নেমেছে। খবর: রয়টার্স।
গতকাল ইউরোপের পুঁজিবাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১০ দিন ধরে ইউরোপিয়ান স্টকে শেয়ারের দাম বৃদ্ধির পর গতকাল সোমবার বেশিরভাগ সূচকেই হ্রাস পেয়েছে। গতকাল দিনের শুরুর দিকে ইউরোপিয়ান স্টক্স ৬০০ সূচক শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যেখানে গত সপ্তাহে রেকর্ড উচ্চতায় ছিল সূচক। আর এফটিএসই ১০০ সূচক এক শতাংশ ৬৯ পয়েন্ট কমেছে।
এদিকে চীনে জুলাইয়ের খুচরা বিক্রি, শিল্পোৎপাদন ও শহরের বিনিয়োগ অর্থনীতিবিদদের ধারণার চেয়ে অনেক কম বৃদ্ধি পেয়েছে, যা করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ-পরবর্তী সবচেয়ে খারাপ প্রবৃদ্ধি।
গতকাল সোমবার দিনের শুরুতে চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (এনবিএস) জুলাই মাসের শিল্প প্রবৃদ্ধির প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির জুলাইয়ের আর্থিক প্রবৃদ্ধি বছর ভিত্তিতে ছয় দশমিক চার ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে অর্থনীতিবিদদের ধারণা ছিল প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। যদিও জুন মাসে এই প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। আর বছর ভিত্তিতে খুচরা বিক্রি বেড়েছে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ, যেখানে প্রত্যাশা ছিল ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। আর জুনে এ প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ১ শতাংশ।
চীনের এ প্রবৃদ্ধি হ্রাসের খবরে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা কমিয়ে দেয় বিনিয়োগ। মূলত জুলাইয়ে কয়েক দফায় বন্যা এবং কভিডের ডেল্টা ধরনের সংক্রমণের কারণে চীনের আমদানি-রপ্তানিতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।
এছাড়া জাপান, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়ায়ও ডেল্টা মারত্মক প্রভাব ফেলে। এদিকে হঠাৎ করে আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখল এবং মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের খবরে গতকাল এশিয়ার পুঁজিবাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।
এদিকে এমএসসিআই’স অল কান্ট্রি ওয়ার্ল্ড ইনডেক্সে ৪৯টি দেশে তাদের শেয়ার সূচক শূন্য দশমিক দুই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টকেও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ও নাসডাক সূচক শূন্য দশমিক দুই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
যদিও চীনের ব্ল– চিপস সিএসআই৩০০ সূচক শূন্য দশমিক দুই শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর জাপানের নিক্কি (এন২২৫) সূচক এক দশমিক সাত শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে গত সপ্তাহে সূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা অনুভূতি প্রকাশের পর ফের সূচক কমতে শুরু করেছে। আর ১০ বছরভিত্তিক ট্রেজারি বন্ডের দাম ১১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের সপ্তাহব্যাপী বৃদ্ধি কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে ইউরো বেড়েছে ১.১৭৯১, যেখানে ইয়েনের বিপরীতেও কমেছে ডলারের দাম।
এদিকে পণ্যবাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে গত সপ্তাহের আউন্সপ্রতি এক হাজার ৬৮৪ ডলার থেকে বেড়ে এক হাজার ৭৭১ ডলার হয়েছে। আর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্রেন্ট
অয়েল এক দশমিক পাঁচ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৯ দশমিক ৫৩ ডলার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই এক দশমিক সাত শতাংশ কমে ব্যরেলপ্রতি ৬৭ দশমিক ২৪ ডলারে বিক্রি হয়েছে।