শেয়ার বিজ ডেস্ক: তরুণ বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করতে চীন নিয়েছে ব্যাপক উদ্যোগ। সম্প্রতি ‘২০২৫ চায়না ইয়ুথ মে ফোর্থ মেডেল’ পেয়েছেন ৩০ জন ব্যক্তি ও ৩০টি দল, যাদের অনেকেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
চীন সরকার এখন তরুণদের বড় গবেষণা প্রকল্পে নেতৃত্ব দিতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। ন্যাশনাল ন্যাচারাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের ৪৫ শতাংশ প্রকল্পই বরাদ্দ হচ্ছে ৪০ বছরের কম বয়সী গবেষকদের জন্য।
এ বছর পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন শেনচৌ-১৬ অভিযানে পেলোড বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্বপালনকারী মহাকাশচারী কুই হাইছাও এবং রোবোটিক প্রযুক্তিতে বিপ্লব ঘটানো ইউনিট্রি টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা ওয়াং সিংসিং।
আরেক পদকপ্রাপ্ত গবেষক হলেন নানচিং ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক তু লিংচিয়ে। তার দল বিশ্বের প্রথমবারের মতো ‘কাইরাল গ্র্যাভিটন মোডস’ নামক গ্র্যাভিটন তথা মাধ্যাকর্ষণের জন্য দায়ী অনুরূপ কণার পরীক্ষামূলক গবেষণা-প্রতিবেদন নেচার সাময়িকীতে প্রকাশ করে।
এই গবেষণার জন্য প্রয়োজন ছিল ব্যয়বহুল যন্ত্রপাতি এবং চরম ঠান্ডা পরিবেশে কাজের সক্ষমতা। একপর্যায়ে আর্থিক সংকটে পড়লেও, চিয়াংসু প্রাদেশিক প্রকৃতিক বিজ্ঞান ফাউন্ডেশন থেকে ৩০ লাখ ইউয়ানের সহায়তা তাদের গবেষণাকে বাঁচিয়ে তোলে।
নানচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের উপপরিচালক সুন চিয়ান বলেন, ‘তরুণ গবেষকরা প্রথা ভাঙা কাজ করতে চায়, কিন্তু অনেকে অর্থের অভাবে থেমে যায়। তাই আমরা বিশেষ তহবিল চালু করেছি।’
এ ছাড়াও, চিয়াংসু প্রদেশে গবেষণার ফলাফল বাস্তবে প্রয়োগে বেশ কয়েকটি বায়োমেডিক্যাল ইনোভেশন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে ওষুধ আবিষ্কার থেকে শুরু করে প্রযুক্তি হস্তান্তর পর্যন্ত নানা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
সুচৌ শহরের এক ইনোভেশন সেন্টার নতুনভাবে বীমা কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারত্বে গবেষণা প্রকল্পের বাণিজ্যিক ঝুঁকি কমাতে ‘টেক ট্রান্সফার ইন্স্যুরেন্স’ চালু করেছে।
নানচিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক লিন ইউহুই, যিনি এক স্ট্রোক ওষুধ প্রকল্পে এই কর্মসূচির সুবিধা নিয়েছেন, বলেন, ‘এই ধরনের নীতিগত উদ্ভাবন আমাদের গবেষণায় মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।’
চীনের হুবেই প্রদেশে একটি নীতিমালায় বলা হয়েছে, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের বাণিজ্যিক লাভের অন্তত ৭০% সংশ্লিষ্ট গবেষক বা দলের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে।
এদিকে শাংহাই শহরের লক্ষ্য হলো ২০২৭ সালের মধ্যে সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ইউয়ানের বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পন্ন করা।
নানচিং অ্যারোনটিক্স ও অ্যাস্ট্রোনটিক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক চাং চিংইয়াং বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানীরা যেমন উদ্ভাবনী, তেমনি সত্য অনুসন্ধানে অটুট। তারাই ভবিষ্যতের বিজ্ঞান-প্রযুক্তির পথ দেখাবে।’
সূত্র: সিএমজি