Print Date & Time : 4 September 2025 Thursday 4:17 pm

চীনে মেগাপ্যাক ব্যাটারি উৎপাদন করবে টেসলা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীনের রাজধানী সাংহাইয়ে মেগাপ্যাক ব্যাটারি উৎপাদনের জন্য কারখানা নির্মাণ করবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান টেসলা। ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপড়েন সত্ত্বেও গত রোববার চীনে দ্বিগুণ বিনিয়োগের ঘোষণা দিল ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান। খবর: রয়টার্স।

বেইজিংয়ের কারখানায় বছরে ১০ হাজার ব্যাটারি উৎপাদিত হবে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় টেসলার একটি মেগাপ্যাক কারখানা রয়েছে। সেখানেও বছরে ১০ হাজার ব্যাটারি উৎপাদিত হচ্ছে।

২০১৯ সাল থেকে চীনের সাংহাই কারখানায় মডেল থ্রি’র গাড়ি উৎপাদন করছে টেসলা। টেসলা সাংহাইয়ের এ গিগা ফ্যাক্টরির উৎপাদন সক্ষমতা বছরে সাড়ে চার লাখে উন্নীত করতে চায়।

টেসলার দাপ্তরিক টুইটার অ্যাকাউন্টে চীনে কারখানা নির্মাণের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। ইলন মাস্কও তা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করেছেন।

সাংহাইয়ে টেসলার বিশাল বিদ্যুৎচালিত গাড়ি উৎপাদন কারখানা রয়েছে। সেই গাড়ি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করার পাশাপাশি এ কারখানায় যে মেগাপ্যাক ব্যাটারি উৎপাদিত হবে, তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্রি হবে।

সাংহাইয়ে এ কারখানা নির্মাণ করে টেসলা চীনের ব্যাটারি সরবরাহব্যবস্থার সুবিধা নিতে চায়। সেইসঙ্গে এতে তার মেগাপ্যাক লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির দামও কমবে। বিশ্বব্যাপী এর ব্যবহার বাড়বে। বিশ্বে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ সংরক্ষণে ব্যবহƒত ব্যাটারির চাহিদা বাড়ছে। ফলে এ কারখানার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে চীনের বৃহৎ ব্যাটারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিএটিএল টেসলাসহ অন্য বাণিজ্য সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করছে। সিএটিএলের চেয়ারম্যান রবিন জেং এখন বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যাটারির মধ্যে ব্যবসা সীমিত রাখতে চান না। কিন্তু চীনে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির চাহিদা কমেছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে চীনে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বিক্রির প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে, গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৫০ শতাংশ।

মেগাপ্যাক বিশালাকার ব্যাটারি। এতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করা যায়। বিদ্যুৎ গ্রিডের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও বিদ্যুৎবিভ্রাট ঠেকাতে এ ব্যাটারি সহায়ক ভূমিকা রাখে। বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করা যায় বলে বিদ্যুতের অতিরিক্ত উৎপাদন হলে এ ব্যাটারির সাহায্যে তা এক দেশ থেকে আরেক দেশে বা আরেক রাজ্যে পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব। ফলে অনিয়মিত উৎস থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করে প্রয়োজনের সময় বাড়তি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে এ ব্যাটারি।

চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে চলতি বছর পঞ্চমবারের মতো গাড়ির দাম কমিয়েছে টেসলা। টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক বলেন, বিদ্যমান বাস্তবতায় অতিরিক্ত মুনাফা করার মানসিকতা ত্যাগ করেছেন তিনি। টেসলা মডেল থ্রি সেডান গাড়ির দাম কমিয়েছে এক হাজার ডলার। এছাড়া মডেল ওয়াই ক্রসওভারের দাম দুই হাজার ডলার কমানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম দামি মডেল এসও মডেল এক্সের দাম কমানো হয়েছে পাঁচ হাজার ডলার করে। মডেল ওয়াইয়ের একটি নতুন সংস্করণও বাজারে এসেছে, যার দাম ৪৯ হাজার ৯৯০ ডলার। চলতি বছরের শুরুতে টেসলার দাম কমানোর পর জানুয়ারিতে মাস্ক জানিয়েছিলেন, উৎপাদনের প্রায় দ্বিগুণ হারে পণ্যটির ক্রয়াদেশ পাচ্ছেন তারা। কোম্পানিটি অবশ্য সরবরাহ ও চাহিদার গতিশীলতা ধরে রাখতে পারেনি। চীনসহ অনেক দেশে এর চাহিদা কমেছে। শেষ প্রান্তিকে টেসলা গ্রাহকদের কাছে যা হস্তান্তর করা হয়েছে, তার চেয়ে প্রায় ১৮ হাজার বেশি গাড়ি উৎপাদন করেছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় নীতি সুদহার বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাধ্য হয়ে আবার বিদ্যুৎচালিত গাড়ির দাম দুই থেকে ছয় শতাংশ কমিয়েছে টেসলা। তবে টেসলা বিদ্যুৎচালিত গাড়ি দিয়েই মূল ব্যবসা করে। তবে ইলন মাস্ক সৌরবিদ্যুৎ ও ব্যাটারির ব্যবসাও বড় করতে চান, মোটামুটি বিদ্যুৎচালিত গাড়ির সমপর্যায়ে নিয়ে যেতে চান।