শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীনা পণ্য আমদানিতে নতুন করে আরও ২০ হাজার কোটি ডলারের শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীন নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন না করলে ১০ শতাংশ এই শুল্ক বসানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, যা আগামী মাস থেকে কার্যকর হবে। ট্রাম্পের এই বক্তব্যের ফলে দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল। বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের পরিণতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস নেমেছে। খবর বিবিসি।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পাঁচ হাজার কোটি ডলারের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে আমদানি শুল্কারোপ করা হবে, যা আগামী জুলাই মাস থেকে কার্যকর হবে। তার ওই ঘোষণার জবাবে চীন জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সমপরিমাণ পণ্যের ওপর তারাও শুল্কারোপ করবে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে কৃষিপণ্য, গাড়ি ও সামুদ্রিক পণ্য।
চীনের পাল্টা হুমকির জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, চীন মার্কিন কোম্পানি, শ্রমিক ও কৃষকদের ওপর বদলা নিতে চাইছে, যারা কোনো দোষ করেনি। সর্বশেষ হুমকিতে ট্রাম্প বলেছেন, বেইজিং যদি মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আরও ২০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্ক বসাবে। তিনি তার বাণিজ্য উপদেষ্টাকে সেসব চীনা পণ্য চিহ্নিত করতে বলেছেন, যেগুলোর ওপর নতুন শুল্কারোপ করা হবে।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৮০০ ধরনের চীনা পণ্যে বছরে ৩৪ বিলিয়ন ডলার শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে এয়ারক্রাফটের টায়ার, টার্বাইন থেকে শুরু করে ডিশওয়াশার পর্যন্ত রয়েছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আরও ১৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পণ্যের ওপর শুল্কারোপের চিন্তা করা হচ্ছে এবং এগুলো পরে কার্যকর করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য সম্পর্কে আরও অবনতির আশঙ্কায় গত সোমবার থেকে শেয়ারবাজারে পতন শুরু হয়েছে। গতকাল এশিয়ার প্রধান বাজার জাপানের নিক্কেই সূচক পড়েছে এক দশমিক ৭৭ শতাংশ। হংকংয়ের হ্যাংসেং সূচক ৮৪১ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৭৮ শতাংশ কমেছে। চীনের সাংহাই সূচক কমেছে তিন দশমিক ৭৮ শতাংশ। এছাড়া ভারতের সেনসেক্স সূচক কমেছে দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুর সূচক কমেছে দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ অঞ্চলের অন্য বাজারগুলোও ছিল নি¤œমুখী ধারায়।
ইউরোপের বাজারের মধ্যে লন্ডনের এফটিএসই সূচক কমেছে দশমিক ৭৩ শতাংশ। জার্মানির ডিএএক্স সূচক কমেছে এক দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং সিএসসি ৪০ সূচক কমেছে এক দশমিক ২৫ শতাংশ। এ অঞ্চলেরও অন্য বাজারগুলোও নি¤œমুখী ধারায় ছিল।
মার্কিন বাজারও সোমবার ছিল নি¤œমুখী। তবে এশিয়া ও ইউরোপের তুলনায় পতন কিছুটা কম ছিল এ বাজারে। প্রধান সূচক ডাও জোনস পড়েছে দশমিক ৪১ শতাংশ এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক পড়েছে দশমিক ২১ শতাংশ।