প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: চৈত্রের শেষের দিকে তীব্র দাপদাহে পুড়ছে জনজীবন। কুষ্টিয়ায় টানা কয়েক দিনের তীব্র দাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। গতকাল রোববার বেলা ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রায় চার দিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। চলতি মাসের ১৩ এপ্রিল থেকে জেলায় তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। সহসাই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তারা।
কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌর এলাকার ভ্যানচালক মিন্টু আলী বলেন, চৈত্রের এই তীব্র রোদের কারণে ভ্যান চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারণে মানুষ কম বের হচ্ছে। ফলে আয়-ইনকাম কমে গেছে।
একই এলাকার কৃষক রাজা মালিথা বলেন, এত রোদের তাপে মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। আমরা গরিব মানুষ, কাজ না করলে সংসার চলে না, তাই বাধ্য হয়ে এই রোদের মধ্যে মাঠে কাজ করতে হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার মিরপুর বাজারের ফল ব্যবসায়ী হাসান আলী বলেন, রোদের কারণে দিনের বেলায় বাসা থেকে মানুষ কম বের হচ্ছে। ফলে বেচাবিক্রি দিনের বেলায় অনেক কমে গেছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, গতকাল কুষ্টিয়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া শনিবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি আরও বলেন, প্রায় তিন-চার দিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলতি মাসের ১৩ এপ্রিল থেকে জেলায় তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। সহসাই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, আগামী ১৩ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা বিনা মূল্যে চিকিৎসালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাফফাত হোসেন রানা বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে ডায়রিয়া, জ্বর, ঠাণ্ডা-কাশির মতো রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া, ঠাণ্ডা ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রমজান মাসে ভাজাপোড়া-জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার কারণে মানুষ পেটের পীড়া-জাতীয় রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। বাইরের খাবার খাওয়া যাবে না। ভাজাপোড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।