Print Date & Time : 8 August 2025 Friday 11:29 am

চৌধুরী মনজুর লিয়াকতকে এমডি নয়: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে চৌধুরী মনজুর লিয়াকতকে নিয়োগে অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি শিগগিরই যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন করে এমডি হিসেবে নিয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনাদের আবেদন পর্যালোচনা করে প্রতিষ্ঠান এবং এর আমানতকারীদের স্বার্থে চৌধুরী মনজুর লিয়াকতকে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগের অনাপত্তি দেয়া গেল না। অনতিবিলম্বে একজন স্বচ্ছ ইমেজের যোগ্য ব্যক্তিকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগের জন্য আপনাদের পরামর্শ দেয়া হলো।’

এর আগে চৌধুরী মনজুর লিয়াকত অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটালের এমডি ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি একই প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

সাত মাস ধরে ইসলামিক ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মারুফ মানসুর। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার আলম।

প্রসঙ্গত, জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও প্রতিষ্ঠানের নিয়ম ভেঙে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগে ইসলামিক ফাইন্যান্সের এমডি আবু জাফর মো. সালেহ পদত্যাগ করেন। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন সূচক ধরে তদন্ত করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুন পদত্যাগ করেন সালেহ।

গত বছরের ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি তদন্ত দল প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের পাশাপাশি এর সঙ্গে সালেহ’র সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে, সালেহ একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নীতি লঙ্ঘন করে ১০ লাখ টাকা উৎসব ভাতা নিয়েছেন। ২০১৮ সালের জুনে ইসলামিক ফাইন্যান্সে যোগ দেন সালেহ। তবে যোগদানের ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই তিনি এ সুবিধা নেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কোনো ধরনের সাক্ষাৎকার ও মূল্যায়ন ছাড়াই তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে কিছু কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেন। এমনকি বিধি অনুসারে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা থাকলেও ইসলামিক ফাইন্যান্স কর্তৃপক্ষ তা মানেনি। এছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সালেহ প্রতিষ্ঠানের বোর্ড সদস্যদেরও অংশ নেয়ার সুযোগ দেন, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তা সত্ত্বেও এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ সালেহ’র চুক্তি নবায়ন করে। তার আগের তিন বছরের মেয়াদ ৭ জুন শেষ হয়। গত মে মাসে ইসলামিক ফাইন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদ সালেহকে তার চলতি দায়িত্বে বহাল রাখার অনুমোদন চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই অনুরোধ রাখেনি। উপরন্তু তারা ইসলামিক ফাইন্যান্সকে সালেহ’র বিরুদ্ধে চলা তদন্তের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে অবহিত করে।