ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিভল আদমজীর আগুন

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: ফায়ার সার্ভিসের ৯ ইউনিটের চেষ্টায় ছয় ঘণ্টা পর নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের আগুন নিভেছে; তবে বন্ধ রয়েছে নারায়ণগঞ্জসহ আশেপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ। নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে।

তিনি জানান, আগুন লাগার পরই গ্যাসের লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু ২০ ইঞ্চির পাইপলাইনে প্রচুর গ্যাসের প্রেশার ছিল। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে। তবে পুরোটা সময়ে কেউ হতাহত হননি।

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, ইপিজেডের ভেতরে পলমল গ্রুপের হামজা ফ্যাশনের ভবন নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভূগর্ভে থাকা তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে যায়। পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়।

নির্মাণাধীন ভবনের সার্ভের কাজে থাকা একটি বেসরকারি কোম্পানির প্রকৌশলী মো. রনি বলেন, ‘মেশিনের মাধ্যমে পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। পাইলিং প্রায় ২০ ফুট গভীরে যাওয়ার পর গ্যাসের পাইপ ফেটে যায়। তীব্র বেগে ওপরের দিকে বালি উঠতে থাকে। এভাবে তিন ঘণ্টা বালি ওঠার পর বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। পরে আগুন জ্বলতে থাকে। বিস্ফোরণে মাটি ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে।

নির্মাণশ্রমিক উজ্জ্বল হোসেনও কাজ করছিলেন সেখানে। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে সেখানে ২০ জন লোক ছিলেন। পাইপ ফাটার পর সবাই দূরে সরে যায়। বিস্ফোরণের সময় কাছাকাছি কেউ ছিলেন না বলে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বিস্ফোরণের পর ইপিজেডের শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে ইপিজেড এলাকা থেকে বেরিয়ে যান। তবে ঘটনার পর থেকেই সংবাদকর্মীদের ইপিজেডের ভেতরে প্রবেশ করতে দেননি আনসার সদস্যরা। তারা বলেন, সংবাদকর্মীদের ভেতরে প্রবেশে নিষেধ রয়েছে। এদিকে গ্যাসলাইন মেরামত না হওয়া পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জসহ আশেপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে তিতাস গ্যাসের তরফে একটি এসএমএসে জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, ভবন নির্মাণের সময় আদমজী ইপিজেডের উচ্চচাপের গ্যাসপাইপ লাইনে ছিদ্র হওয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। লিকেজ মেরামত না হওয়া পর্যন্ত ওই এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

আগুনের কারণে জাতীয় গ্রিডের কোনো লাইন বন্ধ করা না হলেও তিতাসের কিছু সঞ্চালন লাইন বন্ধ করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) পরিচালক (অপারেশন) তাজুল ইসলাম মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘কিছু সঞ্চালন লাইন বন্ধ করতে হয়েছে, কারণ পাইপের ভেতরে থাকা গ্যাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগুন নেভানোর উপায় ছিল না। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে ওই অঞ্চলের গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।’