নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এলাকায় আগামী ৭ আগস্ট থেকে পরবর্তী ছয় দিনে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০ ডোজ করে দেড় লক্ষাধিক ডোজ মডার্নার টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। কডিভ-১৯ সংক্রমণ রোধে টিকাকে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত মডার্না ভ্যাকসিনেশন গ্রহণ ও প্রয়োগ সম্পর্কিত অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মেয়র।
তিনি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনের প্রায়োগিক কর্মপদ্ধতি তুলে ধরে বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে বুথে প্রতিদিন ২০০ করে কমপক্ষে ৬০০ ডোজ টিকা দেয়া হবে। প্রতিটি বুথে দুজন প্রশিক্ষিত ভ্যাকসিনেটর ও তিনজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে সিনিয়র সিটিজেন, নিবন্ধিত নাগরিক, আবেদনকৃত নাগরিক ও কাউন্সিলরদের কাছে নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারীরা টিকা নিতে পারবেন। গতকাল সোমবার থেকে নিজ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে সরবরাহ করা ফর্মে যে-কেউ আবেদন করতে পারছেন।
এ সময়ে মেয়র কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেনিং কার্যক্রমে কাউন্সিলরদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তারা এলাকাবাসীর ভালো-মন্দ ও সুবিধা-অসুবিধার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনিং কার্যক্রম সেবাদানের ক্ষেত্রে তাদের জন্য বড় সুযোগ। তারা এলাকাবাসীর ভোটে নির্বাচিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে এ কাজটি ভালোভাবে সম্পাদন করতে পারলে সবার আস্থাভাজন হতে পারবেন।
চসিক নগরীতে প্রথম পর্যায়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছে। কোরবানির ঈদের পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ ও ডাম্পিং করে নগরীর স্বাস্থ্যবান্ধব পরিবেশ সুরক্ষার সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছেন। এ অর্জন সম্ভব হয়েছে কাউন্সিলরদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও অবদানের জন্য।
মেয়র আরও বলেন, কভিড-১৯ সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া বিস্তারের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। তবে এর বিস্তার ঢাকার মতো এখনও প্রকট না হলেও এখন থেকে তা প্রতিরোধে সতর্ক হতে হবে। নগরীর কোথাও বাসাবাড়ি, খোলা জায়গায় পরিষ্কার পানি যাতে জমতে না পারে সে দিকে কাউন্সিলদের দেখভাল ও তদারকি করতে হবে।
তিনি মশক নিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন, এ ক্ষেত্রে ছিটানো ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় ও সরঞ্জামগত অপ্রতুলতা থাকলেও সামর্থ্য অনুযায়ী সবকিছু করা হচ্ছে। মশার ওষুধের কার্যকারিতা যাচাই-বাছাইয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন, অনুপ্রাণ বিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের বিশেষজ্ঞদের একটি টিমের গবেষণা প্রতিবেদন আজ মঙ্গলবার আমাদের কাছে আসবে। এর ভিত্তিতে মশক নিধনে ৩০ দিনের ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করা হবে।
স্বাস্থ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভপতি কাউন্সিলর জহর লাল হাজারীর সভাপতিত্বে ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
মোহাম্মদ শহীদুল আলম। সভায় ক্যাম্পেইন প্রেজেনটেশন উপস্থাপন করেন ডা. সরওয়ার আলম। সভায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, বিভাগীয় প্রধান ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।