ছুটিতে পাঠানো হলো সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেনকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এই ছুটি ৪ মে ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে এবং চলবে ৪ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত।

ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কিছু অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী ৪ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকের এমডির চলতি দায়িত্ব পালন করবেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) আবিদুর রহিম চৌধুরী।

এর আগেও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের এমডিকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। এক্ষেত্রে তাদেরকেও জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়। কিছু ব্যাংক এমডিকে ছুটিতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে, আবার কিছু ব্যাংক নিজেদের সিদ্ধান্তে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।

জানা গেছে, সাউথইস্ট ব্যাংকে গত কিছুদিনে কেনাকাটা, সংস্কার এবং প্রচারের নামে বড় অঙ্কের অর্থ তছরুপের ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংকটির নিয়োগ, তহবিল ব্যবহার ও ঋণের ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল এবং ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা।

এসব অনিয়মের জন্য তিন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- ব্যাংকটির সাতটি বিভাগের দায়িত্বে থাকা ওয়ারেস উল মতিন, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ও করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ তানভীর রহমান, কোম্পানি সচিব এ কে এম নাজমুল হায়দার।

নিরীক্ষা অনুসারে, এই কর্মকর্তারা সাউথইস্ট ব্যাংকে অনিয়মের চক্র গড়ে তুলেছিলেন। তাদের সেসময় ব্যাংকটির পরিচালনা বোর্ড সহায়তায় এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়েছিল।

এছাড়াও ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের সময়েও সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে বড় অঙ্কের জরিমানা পরিশোধ করার পরও তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি পদত্যাগ করলেও পরিচালক পদে অব্যাহত ছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে বড় পরিবর্তন আসে। এম এ কাশেম, যিনি ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন, আবারও ২০ বছর পর ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন।

তবে আরও একটি আলোচিত ঘটনা ছিল, যখন সাউথইস্ট ব্যাংক ঋণখেলাপি তথ্য গোপন করে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। তারা হলেন সাবের হোসেন চৌধুরী, মোরশেদ আলম ও মামুনুর রশিদ কিরণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিদর্শনে ব্যাংকটির ভয়াবহ অনিয়মের আরও তথ্য ওঠে এসেছে। বিশেষত প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার ঋণে নানা ধরনের অনিয়মের সন্ধান পাওয়া গেছে এবং খেলাপি ঋণের তথ্য গোপন রাখার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছে।