আশিকুল ইসলাম, জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সীমানা প্রাচীর ও কর্মচারীদের ডরমিটরি ভাঙার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও নতুন প্রাচীর নির্মাণ কিংবা সেফটি বেড়া দেয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গত ৬ জুন পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজারের রাস্তাসংলগ্ন ড্রেন নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের খোঁড়াখুঁড়িতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের বড় একটি অংশ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডরমেটরি ভেঙে পড়ে। ঘটনার পরদিন সকাল থেকে দেয়াল তৈরির কাজ শুরু করার কথা থাকলেও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাৎক্ষণিক টিনের বেড়া দেয়া হলেও পরবর্তীকালে সেটিও খুলে ফেলা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে শুরু করে শাঁখারিবাজার হয়ে ইসলামপুর পর্যন্ত ড্রেন তৈরির কাজ শুরু করেছে ডিএসসিসি। খোঁড়াখুঁড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও রাস্তাসংলগ্ন অংশে ভাঙন দেখা না দিলেও শাঁখারিবাজারের দিকে রাস্তার পাশের অংশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ও কর্মচারীদের ডরমিটরির একাংশ ভেঙে পড়ে। দেয়ালটি ভেঙে পড়ায় এর পাশ ঘেঁষে গড়ে তোলা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মচারীর ঘর ভেঙে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের বুক সর্টার সাদিয়া সামাদ। তার বাসার ফ্রিজ, টিভি, কম্পিউটার ও আসবাব ড্রেনে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কর্মচারীদের ঘর ভেঙে পড়েছে। দেয়ালটি পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় ভেতরের দিকে ধীরে ধীরে অনেকটা ভাঙতে শুরু করেছে। এতে কর্মচারীরা বসবাসের জন্য জায়গাও পাচ্ছেন না।
এদিকে ডিএসসিসির কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন বলছেন, ড্রেনের কাজ শেষ করে সøাব বসানোর পর দেয়াল তৈরির কাজ শুরু হবে। অনেক পুরোনো হওয়ায় দেয়ালের অবস্থা আগেই নড়বড়ে ছিল। মাটি ভরাট না করে কাজ করা সম্ভব নয়। তবে দেয়ালের ভেতরের অংশে কাঁদামাটি ফেলতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল জানান, আমি তাদের বারবার বলছি, দেয়ালের কাজটা করে দিতে। তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। প্রয়োজনে আমি আবার বলব।
সিটি করপোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ প্যারিশ বলেন, আজকে ড্রেনের সø্যাবের কাজ শুরু করে দিতে বলা হয়েছে। এ কাজ হয়ে গেলে দেয়ালের কাজ শুরু করে দেব। ভিত্তি শক্ত না করে দেয়ালের কাজ তো শুরু করা যাবে না। শিগগিরই এ কাজ করা হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, দেয়ালটি আজ থেকে ৬০ থেকে ৭০ বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা। পরবর্তী সময়ে তা জগন্নাথ কলেজের হয়েছে, বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই পাশের দেয়ালের নিচের ইট ক্ষয় হয়ে একদম নড়বড়ে অবস্থা হয়ে গেছে। ড্রেন তৈরির সময় অল্প খোঁড়াখুঁড়িতেই সেটা পড়ে যায়। সেখানে বালু দিয়ে ভরাট করে দেয়াল করে দেয়া হবে। আমি বলে দিয়েছি দেয়াল করে না দিলে আমি বিল পেপারে সাইন করব না।
দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসার মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, আমি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে যাচ্ছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছে ড্রেনের কাজ শেষ হলেই তারা দেয়াল তৈরির কাজ শুরু করবে। লোকবল কম থাকায় তাদের কাজ করতে দেরি হচ্ছে।
ঠিকাদার সোহেল মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা শিগগির নতুন করে দেয়াল নির্মাণ করে দেব।