শেয়ার বিজ ডেস্ক: এসএসসি পরীক্ষায় এ বছর জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ জেলার শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় এই কলেজ থেকে অংশ নেওয়া ৫২ পরীক্ষার্থীর সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে।
জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, এ সাফল্য বিগত কয়েক বছর ধরে অর্জিত ধারাবাহিক সাফল্যেরই অংশ। ক্যাডেট কলেজ পরিচালনা পরিষদের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং কলেজের অধ্যক্ষ বেগম নিশাত কাদেরীর সুযোগ্য তত্ত্বাবধানে জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ এ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
পরীক্ষার্থী ক্যাডেটরা তাদের এ সাফল্যের পেছনে কলেজ শিক্ষক এবং বিশেষভাবে তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।
কলেজের অধ্যক্ষ বেগম নিশাত কাদেরী আশা প্রকাশ করেন, জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজের এ সাফল্যের ধারা ভবিষ্যতেও অক্ষুন্ন থাকবে।
অন্যদিকে এবার জয়পুরহাট আর.বি. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট ২৩০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার শতভাগ, যেখানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯৪ জন। এছাড়া জয়পুরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৪৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪২ জন, আর পানের হার শতুভাগ বলে উল্লেখ করে বিদ্যালয় দুটির কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় পাসের হার এবং জিপিএ-৫ দুটোই বেড়েছে। চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার আটজন শিক্ষার্থী, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এক হাজার ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৪৪ হাজার ৯৬ জন শিক্ষার্থী ১৯৬ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ২১ হাজার ৮৮৮ জন। পাসের হার ৮৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত বছর এসএসসিতে পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ১১ শতাংশ।
জানা গেছে, এবার এক হাজার ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৪৯ হাজার ৯৯২ জন শিক্ষার্থী ১৯০ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে পাস করেছিল এক লাখ ১৬ হাজার ৮৫১ জন। আর এ বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার আটজন শিক্ষার্থী, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে চার হাজার ৭৬৩ ছাত্রী এবং চার হাজার ২৪৫ জন ছাত্র।
এদিকে ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবারের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের পাসের হার ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পাসের হার ৮৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং মানবিক বিভাগের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর স্কুলভিত্তিক জিপিএ-৫ বিবেচনায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে সবচেয়ে এগিয়ে আছে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল। এক্ষেত্রে নিজেদের অতীতের সব রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এ স্কুলটি।
এবার স্কুলটি থেকে ৪৭০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ৪৬৯ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৩৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে; যা চট্টগ্রামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পাওয়ার রেকর্ড এটি।
এদিকে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩১ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন শতাংশ কম। এছাড়া এ বোর্ড থেকে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ৭৬৪ জন, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৯৪৮ জন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
যশোর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শিক্ষা বোর্ডের তথ্য মতে, এ বছর যশোর বোর্ডের আওতায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার দুই হাজার ৫২১টি বিদ্যালয় থেকে এক লাখ ৬০ হাজার ৬৩৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ছাত্র ছিল ৮০ হাজার ৩০৯ ও ছাত্রী ৮০ হাজার ৩২৬ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩৭ হাজার ৪৬ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৯৬ হাজার ৭৮৮ জন, বাণিজ্য বিভাগ থেকে ২৬ হাজার ৮০১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। পাস করেছে এক লাখ ৪০ হাজার ২৪৩ জন এবং মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ৭৬৪ জন।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র পাসের হার কিছুটা কমলেও ফলাফল সন্তোষজনক দাবি করে জানান, অষ্টম শ্রেণি থেকে প্রশ্ন ব্যাংকের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ ও পাঠ্যবইয়ে শিক্ষার্থীদের অভ্যস্ত করায় ফলাফল ভালো হয়েছে। ফল যাতে আগামীতে আরও ভালো হয়, সে বিষয়ে বোর্ডের তদারকি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরাও জানান, যশোর বোর্ডে এ বছর ২৫০টি প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। তবে একজনও পাস করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো সাতক্ষীরার কলারোয়া শহীদ স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয় ও দেবহাটা ধাপুখালী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ২৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২১টি থেকে তিন বিভাগে সর্বমোট ৫৫৭ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞানে ৫৪০ জন, ব্যবসায় শিক্ষায় ১২ জন এবং মানবিক বিভাগে পাঁচজন। গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার ২৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টি থেকে তিন বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪৭৪ জন। সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি কলেজ থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।
জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকে সৈয়দপুর উপজেলায় শীর্ষে রয়েছে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটি থেকে শুধু বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯০ জন। ১১৯ জন জিপিএ-৫ পেয়ে উপজেলায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে শুধু বিজ্ঞান থেকে ৯৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
৪২ জন জিপিএ-৫ পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে সৈয়দপুর আল-ফারুক একাডেমি। এ প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানে ৪০ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে দুজন পেয়েছে জিপিএ-৫। পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে সানফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠান থেকে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ জন।