নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের নির্বাচন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে নিয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার সাম্প্রতিক মন্তব্য এদেশের জনগণের আকাক্সক্ষা ও অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে বিএনপি। এক বিবৃতিতে দলটি বলছে, জাখারোভার বক্তব্য গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশিদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিএনপির এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়েছে।
গত ২২ নভেম্বর নিজ দেশে এক ব্রিফিংয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা দাবি করেন, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিরোধী দলের এক নেতার সঙ্গে সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছেন।
তিনি বলেন, বিদেশি কারও সহায়তা ছাড়াই বাংলাদেশের ‘বৈধ নির্বাচনের’ সক্ষমতা রয়েছে। এই নির্বাচন কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ভিয়েনা কনভেনশনের বিরোধী। পরে ইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে তার বক্তব্যের কিছু অংশ তুলে ধরা হয়।
বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, এটি (রুশ মুখপাত্রের বিবৃতি) গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশিদের অনুভূতিকে আঘাত করেছে।
এতে আরও বলা হয়, জাখারোভার বিবৃতি একটি স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সক্ষা ও অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে বিরোধী দলের এক নেতার সঙ্গে পিটার হাসের বৈঠকের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিএনপি এই ভ্রান্ত তথ্য তথা অপব্যাখ্যার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে। বিএনপির সমাবেশ আয়োজনে কোনো বিদেশি কূটনীতিক সহায়তা করেছেনÑএমন অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত অভিযোগ এর আগে উত্থাপিত হয়নি। এ ধরনের বাস্তবতা-বিবর্জিত বক্তব্য বাংলাদেশের জনগণের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আকাক্সক্ষার বিরোধী বলে প্রতীয়মান হয়। কার্যত জাখারোভার দৃষ্টিভঙ্গি গণতন্ত্রকামী জনগণের স্পৃহাকে অবমূল্যায়নের মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থাকেই সমর্থন করে।’
রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ সুসম্পর্কের বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে এতে বলা হয়, ‘পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় স্বার্থে বাংলাদেশ ও রাশিয়া দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমরা মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার অবদানকে গভীরভাবে স্বীকার করি এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের মূল্যায়ন করি। আমাদের প্রত্যাশা, রাশিয়া বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতার সংকল্প ও মহান আত্মত্যাগের উপযুক্ত সম্মান করবে। গণমানুষের ভোটাধিকার, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য চলমান সংগ্রামে রাশিয়ার সমর্থন ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশকে উদ্বুদ্ধ করবে। আর তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশ্বাস করে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য গণতন্ত্রমনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি রাশিয়াও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’