Print Date & Time : 4 August 2025 Monday 5:57 pm

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী আজ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী। জাতীয় পর্যায়ে কবির জš§বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মে ছিলেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। বাসস

কাজী নজরুল ইসলাম চির প্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কয়জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সম্পর্ককে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন?

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ বছর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছেÑ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ: বঙ্গবন্ধুর চেতনায় শাণিতরূপ।’ জাতীয়ভাবে এবার জ্মবার্ষিকীর আয়োজন করা হয়েছে কবির স্মৃতিধন্য ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুরে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কবির জš§বার্ষিকী উদযাপিত হবে। তিন দিনব্যাপী (২৫ থেকে ২৭ মে) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী।

এছাড়া ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লার দৌলতপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।

জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করবে।

বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে আজ সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে স্থাপিত নজরুল প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জš§বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে। এ উপলক্ষে আজ সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী শোভাযাত্রা সহকারে সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে  কবির সমাধিতে  পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। পরে উপাচার্যের সভাপতিত্বে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নজরুল একাডেমি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জš§বার্ষিকী উদযাপনে নজরুল একাডেমি ভবনে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে (মগবাজার মোড় বেলালাবাদ কলোনি) তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হবে।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সংগীত জগৎকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন।