নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠান খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (কেপিসিএল) দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দীর্ঘদিনেও সরকার বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি কার্যকর করেনি। এ অবস্থায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিপি) নির্দেশনা অনুসারে কোম্পানিটি জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে (ন্যাশনাল গ্রিড) সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) বিষয়টি জানিয়েছে কেপিসিএল।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কেপিসিএল খুলনার ১১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র কেপিসি-২ এবং যশোরের নোয়াপাড়ার ৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র কেপিসি ৪০ মেওয়াওয়াট নোয়াপাড়া প্ল্যান্ট থেকে বিপিডিপি বিদ্যুৎ কেনা-সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ কয়েক বছর আগেই শেষ হয়ে হয়েছে। তারপরও কোম্পানিটির তদবিরের জেরে খুলনা পাওয়ারের কাছ থেকে আবার বিদ্যুৎ কিনতে রাজি হয় সরকার। এরপর কেপিসিএলকে বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটির প্ল্যান্ট সচল করার অনুমতি দেয় বিপিডিবি। তবে এবার চুক্তি থেকে আগের ক্যাপাসিটি চার্জের শর্ত বাদ দেয়া হয়। এর আগে সরকার বিদ্যুৎ না কিনলেও ন্যূনতম একটা অর্থ কোম্পানিকে পরিশোধ করতে হতো। নতুন চুক্তিতে সেই শর্তে পরিবর্তন এসেছে। নতুন চুক্তিতে বলা হয়েছে, সরকারের প্রয়োজন হলে বিদ্যুৎ কিনবে এবং তখন ওই বিদ্যুতের দাম পরিশোধ করা হবে। এর আলোকে কোম্পানিটি ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে তার প্ল্যান্ট পরিচালনা করতে পারবে।
এদিকে নতুন চুক্তি হলেও কেপিসিএলকে কোনো বিদ্যুতের চাহিদার বিষয়ে জানায়নি পিডিবি, যে কারণে কোম্পানি কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রি করতে পারেনি। গত বছরের ২৪ মার্চ সর্বশেষ চুক্তিরও মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ওই চুক্তিও নবায়ন করেনি সরকার, যে কারণে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে সরকার।
২০১০ সালে পুঁজিবাজারে আসা খুলনা পাওয়ার কয়েক বছর ধরে ব্যবসায়িকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। ২০২৪ সালে মাত্র পাঁচ কোটি ৭৯ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে কেপিসিএল। অথচ চার বছর আগে ২০২০ সালে ১৩৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল কোম্পানিটি।