নিজস্ব প্রতিবেদক:‘শান্তির জন্য পরিবর্তন, পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি’স্লোগানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।
২৪ দফার এই ইশতেহারে সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের অঙ্গীকার করা হয়েছে। কালো আইন বাতিল, জনসংখ্যা কমানো, বেকারত্ব ও বাজারব্যবস্থায় গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এই ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এ সময় উপস্থিত ছিলেন না। যদিও অতীতে দলের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকেই ইশতেহার ঘোষণা করা হতো।
বিএনপিসহ ১৫টি দলের বর্জনের মধ্যে এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটে না গেলেও তাদের জয় সহজ করতে ২৬টি আসন ছেড়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জোট করার পর জাতীয় পার্টির লাঙ্গলকে ২৬টি আসনই ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তার মধ্যে ২৩টিতে জয় পেয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রধান বিরোধী দল হয় প্রয়াত এইচএম এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি।
এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে চুন্নু বলেন, ‘দেশের মানুষ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে।’
ইশতেহার ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, দেশের এক কেন্দ্রীক শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করে প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চান তারা। ক্ষমতায় গেলে বর্তমান আটটি বিভাগকে তারা আটটি প্রদেশে উন্নীত করবেন।
এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা ভেঙে দুই স্তরবিশিষ্ট সরকার হবে। কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রাদেশিক ব্যবস্থার জন্য প্রাদেশিক সরকারের দুই স্তরবিশিষ্ট কাঠামো থাকবে।
বিভাগগুলোর নাম বদলে উত্তরবঙ্গ প্রদেশ, বরেন্দ্র প্রদেশ, জাহাঙ্গীরনগর প্রদেশ, জাহানাবাদ প্রদেশ, জালালাবাদ প্রদেশ, চন্দ্রদ্বীপ প্রদেশ, ময়নামতি প্রদেশ ও চট্টলা প্রদেশ নাম রাখবে জাতীয় পার্টি।
প্রাদেশিক ব্যবস্থা চালু করে ঢাকায় থাকা প্রশাসনিক সদর দপ্তরের ৫০ শতাংশ কার্যালয় প্রাদেশিক রাজধানীতে স্থানান্তর করারও অঙ্গীকার করা হয়েছে জাতীয় পার্টির ইশতেহারে।
চুন্নু বলেন, বর্তমান ৩০০ আসন ঠিক রাখা হবে ফেডারেল সরকারেও। আর প্রাদেশিক সংসদ গঠন করে সেখানে প্রতি উপজেলা বা থানা থেকে একটি আসন ঠিক করা হবে প্রাদেশিক সরকারের জন্য।
গত কয়েকটি নির্বাচনের মতো জাতীয় পার্টি এবারও বলেছে, ক্ষমতায় যেতে পারলে তারা নির্বাচন পদ্ধতিরও সংস্কার করবে। বর্তমান সরাসরি ভোটের বদলে আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে।