শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরও তিনটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করতে যাচ্ছে জার্মানি। জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে নেয়া পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ দেশটি। খবর: ডয়েচে ভেলে।
দেশটির সরকার বলছে, ছয়টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার তিনটি কেন্দ্র বন্ধ করার কথা রয়েছে। নতুন বছরে পা রাখার আগে তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করছে জার্মানি। বাকি তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০২২ সালের শেষের দিকে বন্ধ করে দেয়া হবে।
জার্মানির এ ছয়টি পরমাণু বিদ্যুৎ স্থাপনার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুতে ১২ শতাংশ অবদান রাখে। ৪১ শতাংশ পূরণ হয় নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে। আর গ্যাস থেকে আসে ১৫। কয়লাভিত্তিক প্রকল্প থেকে আসে বাকি ২৮ শতাংশ।
গ্রোহেন্ডে, ব্রোকডর্ফ ও গুন্ড্রেমিঙ্গেন শহরের পারমাণবিক চুল্লি স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বন্ধ করা হবে। তখন থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এ তিনটি প্লান্টের উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৪ দশমিক ২ গিগাওয়াট। ই.অন ও আরডব্লিউই পরিচালিত এ তিনটি চুল্লিতে প্রায় তিন দশক বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে দেশটি। অবশিষ্ট ইসার ২, এমসল্যান্ড ও নেকারওয়েস্টেইম ২ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চলতি বছর শেষের দিকে বন্ধ করা হবে।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তথ্যমতে, জার্মানিতে বর্তমানে ছয়টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সেগুলো বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে মোট ২৬টি পারমাণবিক বিদ্যুৎচুল্লি বন্ধ হচ্ছে, একটি বন্ধের পরবর্তী অবস্থায় রয়েছে ও তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এরই মধ্যে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
জার্মান এনার্জি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন বিডিইডব্লিউ’র প্রধান কার্স্টিন আন্দ্রেই বলেছেন, জার্মানির পারমাণবিক বিদ্যুৎশূন্য হওয়া চূড়ান্ত। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো জার্মান সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে চুল্লি বন্ধ করলেও ২০২২ সালেই দেশটিতে পারমাণবিক যুগের অবসান হবে না জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা।
২০১১ সালে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে। এর আগে ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সে বছরই জার্মান সরকার নিজেদের পারমাণবিক বিদ্যুৎনির্ভরতা শূন্যে নামাতে উদ্যোগী হয়।