জেদ্দা থেকে সরাসরি ব্রাসেলসে যাচ্ছে স্বল্প বাজেটের ফ্লাইনাস

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরবের স্বল্প বাজেটের উড়োজাহাজ সংস্থা ফ্লাইনাস গত রোববার এক ঘোষণায় বলেছে, তারা প্রথমবারের মতো জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে। সৌদি পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করার অংশ এই ফ্লাইট গন্তব্য। খবর: আরব নিউজ।

এই পদক্ষেপকে ফ্লাইনাসের ইতিহাসে এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেননা এর মধ্য দিয়ে সংস্থাটি ইউরোপের দেশগুলোয় তাদের কার্যক্রম শুরু করছে। এমনকি সৌদি আরবের জাতীয় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর মধ্যে ফ্লাইনাসই প্রথম সরাসরি ইউরোপের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করছে বলে জানায় সৌদি প্রেস এজেন্সি।

ফ্লাইনাসের এই নতুন রুটটিকে সৌদি এয়ার কানেক্টিভিটি প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এই কর্মসূচিটি সৌদি আরবের জাতীয় পর্যটন কৌশলের মূল উদ্যোগ, যা দেশটির সঙ্গে বৈশ্বিক কানেক্টিভিটি বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

পর্যটন কৌশলের অন্যতম উদ্দেশ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরবে ১৫০ মিলিয়ন বা ১৫ কোটি পর্যটক টানা। একই সঙ্গে বিশ্বে ২৫০টির বেশি গন্তব্যে দেশটির আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা।

নতুন চুক্তির ফলে সৌদি-বেলজিয়ান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষরকালে দুই দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে সৌদি আরবে নিযুক্ত বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত পাসক্যাল গ্রেগরিও ছিলেন।

ব্রাসেলস বিমানবন্দরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেনÑব্রাসেলসে নিযুক্ত সৌদি আরবের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ মোয়ানস, ফ্লাইনাসের প্রতিনিধিরা এবং ভ্রমণ ও পর্যটন খাতের বিখ্যাত ব্যক্তিরা।

এয়ার কানেক্টিভিটি প্রোগ্রাম (এসিপি) চালু করা হয় ২০২১ সালে, যা সৌদি আরবের পর্যটন খাতের প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই কর্মসূচি দেশটির বৈশ্বিক বিমান চলাচল উন্নত করার পাশাপাশি নতুন গন্তব্য খুঁজে পেতে সহায়তা করছে। এর মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক পর্যায়ে শীর্ষে থাকতে চায় সৌদি আরব।

ফ্লাইনাসের এই উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ বিশ্বে অ্যাভিয়েশন খাতে সৌদি আরবের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। একই সঙ্গে সৌদির অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের সম্ভাবনা এগিয়ে নিচ্ছে এবং বিশ্বেরভ্রমণ ও পর্যটন খাতের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে।

গত ২ ডিসেম্বর উড়োজাহাজ সংস্থাটি আরও ছয়টি নতুন গন্তব্য ও রুট উম্মোচন করেছে। এর মধ্যে দুইটি অভ্যন্তরীণ গন্তব্য রয়েছে আভা ও তাবুক। বাকি চারটি আন্তর্জাতিক ক্যাটেগরির। এগুলো হচ্ছেÑদুবাই, আম্মান, ইস্তান্বুল ও আঙ্কারা। আগের চারটি গন্তব্যেও নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। সেগুলো হলোÑমদিনা থেকে রিয়াদ. জেদ্দা, দাম্মান ও কায়রো।

এর আগে গত অক্টোবরে ফ্লাইনাস এক বিবৃতিতে জানায়, সৌদি আরব থেকে বাহরাইনে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, রিয়াদের সঙ্গে বাহরাইনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে সংযুক্ত করা হবে। এরপর গত ১৫ নভেম্বর থেকে এই রুটে উড়োজাহাজ চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। একই সময়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে নতুন রুটের বিষয়ে জানানো হয়। তখন বলা হয়, ব্রাসেলস রুটে সপ্তাহে সরাসরি তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

ফ্লাইনাসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বন্দের আল-মোহান্না এক বিবৃতিতে বলেন, জেদ্দা থেকে বেলজিয়ামের রাজধানীতে নতুন গন্তব্য যুক্ত করার মাধ্যমে ফ্লাইনাস বিশ্বে স্বল্প বাজেটের এয়ারলাইনগুলোর মধ্যে নিজেদের স্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছে।

এপিসির সিইও আলি রজব বলেন, সৌদি আরবের বিশেষ গন্তব্য ইউরোপ। গত বছরে মার্সেইল-জেদ্দা রুট চালু করে ফ্লাইনাস, তারপর ব্রাসেলসে এই গন্তব্য চালু করার মধ্য দিয়ে আমরা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছি। আমরা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনগুলোর মাধ্যমে ইউরোপের ভ্রমণকারীদের জন্য সৌদি আরবকে নতুন রূপে হাজির করতে যাচ্ছি।