নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপকতা রোধে জোনভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নে অনলাইন বৈঠক করেছেন সরকারের পাঁচজন মন্ত্রী এবং তিনজন মেয়র। দেশের বর্তমান করোনা মহামারির সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা নিয়ে গতকাল উচ্চপর্যায়ের এ অনলাইন ভিডিও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে কনফারেন্সে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক অংশ নেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে যুক্ত ছিলেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন অংশ নেন।
করোনা সংক্রমণ রোধে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে সীমিত পরিসরে অফিস-আদালত খুলে দিয়ে অর্থনীতি সচল রাখতে এখন জোন বা এলাকাভিত্তিক লকডাউনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার জোনভিত্তিক লকডাউন করা হয়েছে।
গত ৮ মার্চ থেকে তিন মাসের বেশি সময়ে দেশে সর্বাধিক মৃত্যু ও রোগী শনাক্ত হয়েছে ১২ জুন। এদিন ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বাধিক মৃত্যু ও শনাক্তের দিন অনলাইন বৈঠক করল সরকারের ঊর্ধ্বতনরা।
বৈঠকে অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম জোনভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠিত কমিটি সক্রিয় করার আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানানো হয় এ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
‘দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য জোনভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করা হলে তা বাস্তবায়নে রাজধানীসহ সারা দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি এবং উপ-কমিটিকে সক্রিয় করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনি পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সে কমিটিগুলোকে সক্রিয় করে লকডাউনের বিধি-বিধান বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিলে তা অধিক কার্যকরী হবে।
জোনভিত্তিক এলাকাগুলোতে অন্য জরুরি সেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুবিধার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে তাজুল ইসলাম বলেন, এসব এলাকায় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেল করে তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে যখন এলাকাভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করা হবে তখন সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ন্যস্ত করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ করোনা ছাড়াও অন্য আইনশৃঙ্খলা জনিত বিষয় সামলাতে গিয়ে শুধু করোনা প্রতিরোধে এত-সংখ্যক জনবল পদায়ন করা কঠিন হবে। সেজন্য জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ এটা কার্যকরী করতে সহজ হবে।
এ সময় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য কিছুসংখ্যক হাসপাতাল রাখা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।