নিজস্ব প্রতিবেদক: পেঁয়াজ, ডিম, আলুর পর এবার বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সে সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলার পাশাপাশি সব ধরনের সবজি। নিয়ন্ত্রণহীন পেঁয়াজের বাজার। সঙ্গে বাড়ছে রসুন, আদার দাম। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। বৃষ্টি না থামলে দাম আরও বাড়তে পারে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫-২০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দামে ২৫০ গ্রামে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। বৃষ্টির কারণে কাঁচামরিচের এমন দাম বেড়েছে বলে জানিয়ে একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘গতকালও এক পোয়া কাঁচামরিচ ১৫ টাকায় বিক্রি করেছি। আর আজ ৩০ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই। বৃষ্টির কারণে মরিচের দাম বেড়েছে। বৃষ্টি না থামলে কাঁচামরিচের দাম আরও বাড়তে পারে।’
বাজারে গত সপ্তাহে খুচরা প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা মিসর ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা এবং ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। অথচ সপ্তাহ যেতে না যেতেই সরবরাহ কমেছে এমন অজুহাতে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
এর আগে ভারতীয় পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর পাইকারি বাজারে বিক্রি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকা। একইভাবে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৬ টাকা। এ সব বাজারে খুচরা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে, পেঁয়াজের দাম বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে আদা ও রসুনের দাম। এ সব বাজারে খুচরা প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হতে দেখা গেছে (আকারভেদে) ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাঁচা আদা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। আর থাইল্যান্ডের আদা বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে (নাটোর) ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি ১৬০ থেকে ১৭০, দেশি এক দানা রসুন ২০০ থেকে ২২০, চায়না রসুন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
এক সপ্তাহ আগে খুচরা প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হয়েছে (আকারভেদে) ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, কাঁচা আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। আর থাইল্যান্ডের আদা বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে (নাটোর) ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, দেশি ১৫০ থেকে ১৬০, দেশি এক দানা ১৮০ থেকে ২০০, চায়না রসুন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ বাড়লেও শীতের আগাম সবজি শিমের দাম গত সপ্তাহের মতো ১০০-১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০-৪০ টাকা পিস। ৩০-৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। মুলার কেজি বিক্রি ৩০-৪০ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো ও গাজরের দাম এখনও চড়া-ই রয়েছে। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে।
শীতের আগাম সবজির সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ, করলা, ঝিঙে, বরবটি, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়স, উসি, ধুন্দলসহ সব ধরনের সবজি। গত সপ্তাহের মতো ছোট আকারের লাউ চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বরবটি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি। চিচিংগা, ঝিঙা, ধুন্দলের কেজি ৫০-৭০ টাকার মধ্যে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৪০-৩০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৬০, পাঙাশ ১২০-১৫০, শিং ৪০০-৬০০, কাচকি ২৫০-৩৫০, পাবদা ৪০০-৬০০, ট্যাংরা ৫৫০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।