ঝিনাইদহে হচ্ছে পয়োবর্জ্য শোধনাগার

দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এককালের প্রমত্তা নবগঙ্গা নদী বাঁচাতে নির্মাণ করা হচ্ছে পয়োবর্জ্য শোধনাগার। ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাশে নগরবাথান এলাকায় তিন একর জমির ওপর এ পয়োবর্জ্য পরিশোধনকেন্দ্র নির্মাণ করছে ঝিনাইদহ পৌরসভা।

ঝিনাইদহ শহর গড়ে উঠেছিল মূলত নবগঙ্গাকে কেন্দ্র করে। একসময় নবগঙ্গায় চলতো স্টিমার ও বড় লঞ্চ। তবে এখন নেই নদীর সেই জৌলুস। দখল ও পৌরবর্জ্যে নদী আজ ক্ষীণ জলাধারে পরিণত হয়েছে। মৃতপ্রায় এ নদী বাঁচাতে ঝিনাইদহ পৌরসভা এক কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছে পয়োবর্জ্য শোধনাগার। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবং এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের কারিগরি সহায়তায় শোধনাগারটি গড়ে তোলা হচ্ছে। থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং দেশি প্রতিষ্ঠান খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এ শোধনাগারটি নির্মাণে যুক্ত আছে।

ঝিনাইদহ পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন জানান, নবগঙ্গাসহ পৌরসভার আশপাশের খালবিল, পুকুর ও ডোবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত করে বাঁচাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পয়োবর্জ্য ফোকাল পারসন ও সহকারী প্রকৌশলী মো. কামালউদ্দীন জানান, নগরবাথান এলাকায় ছিল ময়লা ও আবর্জনার স্তূপ। কেননা শহরের হাজার হাজার টন পয়োবর্জ্য এখানে ফেলা হয়। তাই ছিল দুর্গন্ধ ও দূষিত পরিবেশ, যা এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবং এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের কারিগরি সহায়তায় শোধনাগারটি গড়ে তোলা হচ্ছে। থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং দেশি প্রতিষ্ঠান খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এ শোধনাগারটি নির্মাণে যুক্ত আছে।

ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু জানান, পৌর শোধনাগার নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। শহরের বাসিন্দারা সহযোগিতা করলে নবগঙ্গা নদীর পানি ফের আগের মতো নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যাবে। কেননা প্রতিদিন ৪০ হাজার লিটার পয়োবর্জ্য পরিশোধনের সুযোগ রয়েছে এখানে।

তিনি আরও জানান, শোধনাগারটিই বর্তমানে এক মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। এখানে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সিংহভাগ এলাকাজুড়ে রয়েছে কলাবতী, হ্যালিকোনিয়া, মাধুরী, গোলাপ আর নেপিয়ার জাতের ঘাসের সমারোহ। চারদিকে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি পয়োবর্জ্য শোধনাগার। কোনো ধরনের দুর্গন্ধ নেই, আছে ফুলের ম ম গন্ধ।