টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পরিত্যক্ত ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম!

শাহরিয়ার সিফাত, টাঙ্গাইল: ফেটে গেছে ভবনের কলাম থেকে বিম, খসে খসে দেয়াল থেকে পড়ছে পলেস্তারা। ডেবে গেছে মেঝের কয়েক অংশে। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ চুইয়ে পড়ে পানি। তাই প্রায় চার বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় স্কুলের ভবনটি। কিন্তু তারপরও সে সবের তোয়াক্কা না করে এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শ্রেণি কার্যক্রম চলা বিদ্যালয়টি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায়। সেখানকার ৪৪ নং কাগমাড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এটি।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৮১২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় কাগমারি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এত পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার পরও বিদ্যালয়টিতে একটি টিনশেড বিল্ডিং ও দুটি পাকা ভবন রয়েছে। এর মধ্যে একটি চার কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবন ২০০১ সালে নির্মিত হলেও ১৪ বছরে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। পরে ২০১৫ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২৬৩ শিক্ষার্থী রয়েছে।
ফলে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও বিকল্প কোনো ভবন না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। অন্য একটি পাকা ভবন ও টিনশেড বিল্ডিং একটির অর্ধেক অংশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ এবং বাকি অংশে শিক্ষকরা অফিস হিসেবে ব্যবহার করছেন। অন্য ভবনের দুটি কক্ষে ক্লাস চলে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা সংকুলান না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পরিত্যক্ত ভবনেই ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। ভবনের কলাম থেকে বিম ফেটে গেছে। পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। আর ভবনটির উত্তর ও পশ্চিম পাশে ডেবে যাওয়ায় ও সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে চুয়ে চুয়ে পানি পড়ায় ভবন ভেঙে যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এতে বিদ্যালয়বিমুখ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলারা আফরোজ বলেন, শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা পর্যাপ্ত না থাকায় বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস নিতে হচ্ছে। এর আগে ২০১৫ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরাও ভেঙে পড়ার ভয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসছে না। দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। নতুন একটি ভবন নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভীন বলেন, ভবনটি পরিত্যক্তের বিষয়টি আমার জানা নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।