নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ প্রতিরোধী দুই ডোজ টিকা নেয়া ব্যক্তিদের তুলনায় টিকা না নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। সংস্থাটি এক গবেষণায় পেয়েছে, টিকা নেয়া করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাত শতাংশ, আর না নেয়া ব্যক্তিদের ২৩ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
গত মে ও জুনে দেশে যারা কভিড-আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের জাতীয় তালিকা থেকে দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে এক হাজার ৩৩৪ জনকে নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়। তাদের সবার বয়স ছিল ৩০ বছরের বেশি। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৯২ জন কোনো টিকা নেননি। বাকি ৭৪২ জন অন্তত এক ডোজ টিকা নিয়েছেন। অর্থাৎ সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৫৫ শতাংশ টিকা নিয়েও কভিড-আক্রান্ত হয়েছেন। টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন এমন ৩০৬ জন টিকা নেয়ার অন্তত ১৪ দিন পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সবাইকে দুই ডোজ টিকা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর।
এ গবেষণায় করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির পাশাপাশি রোগের গতিবিধিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। গবেষণায় গত মে ও জুনে কভিড-আক্রান্ত রোগীদের জাতীয় তালিকা থেকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে এক হাজার ৩৩৪ জনকে নির্বাচন করা হয়। তাদের সবার বয়স ছিল ৩০ বছরের বেশি। কভিড-আক্রান্ত এই এক হাজার ৩৩৪ জনের মধ্যে ৫৯২ জন কোনো টিকা নেননি। বাকি সবাই টিকা নিয়েছেন। টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন এমন ৩০৬ জন টিকা নেয়ার অন্তত ১৪ দিন পর কভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।
গবেষণায় সংস্থাটি দেখেছে, টিকা না নেয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত জটিলতায় ভুগেছেন ১১ শতাংশ, যা পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে চার শতাংশ ছিল। আর অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত টিকা না নেয়া করোনা পজিটিভ রোগীদের মধ্যে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত জটিলতার হার এবং দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারী করোনা পজিটিভ রোগীদের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি পাওয়া গেছে।
টিকা গ্রহণকারীরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে তাদের আইসিইউও কম লেগেছে এবং মৃত্যুর হারও কম বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। আইইডিসিআর বলছে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী টিকা না নেয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৯ জনকে আইসিইউতে নিতে হয়েছে, যা তিন শতাংশ। পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে তিনজনকে আইসিইউতে নিতে হয়েছে, যা এক শতাংশের কম। করোনাভাইরাসের টিকা নেননি এমন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, শতকরা হিসেবে, যা তিন শতাংশ। অন্যদিকে গবেষণায় নির্বাচিতদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন এমন একজন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন।