মুন্সীগঞ্জ, প্রতিনিধি: ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলের ৬ আরোহী নিহতের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ড. আ ক ম আকতারুজ্জামান বসুনিয়া, হাইওয়ে পুলিশ সুপার, গাজীপুর অঞ্চলে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে, কখন তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানাননি তিনি।
তিনি বলেন, “বাসে দুইজন স্টাফ ছিলো। আমরা জানতে পেরেছি নুরুন্নবী নামে চালক বাস চালাচ্ছিলো। হাইওয়ে পুলিশ ও রেবের অভিযানে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের এখন পরিচয় ভেরিকেশন করা হচ্ছে। ভেরিফাই করার পর বিস্তারিত জানানো হবে।”
দুর্ঘটনার বিষয়ে এখনও মামলা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “এবার শুধু বাস চালকের বিরুদ্ধে নয়, দুর্ঘটনায় অন্য যারা সংষ্লিষ্ট তাদের সকলের বিরুদ্ধেও মামলা হবে।”
শুক্রবার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজায় যাত্রীবাহী কুয়াকাটাগামী বেপারী বাস রেজি নং ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৫১৭০ থেমে থাকা প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিলে ৬ জন নিহত হন। দুর্ঘটনার পর বাস আটক হলেও স্টাফরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এদিকে, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাসের ধাক্কায় প্রাইভেটকারে থাকা নিহত একই পরিবারের চারজনের মধ্যে তিনজনকে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের নন্দনকোনা গ্রামে কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেট কারের মালিক নুর আলমের স্ত্রী আমেনা আক্তার (৪০), তাঁর বড় মেয়ে ইসরাত জাহান ইমু (২৪), ছোট মেয়ে রিহারকে(১১) আমেনা আক্তারের সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আর আমেনা আক্তারের নাতি শিশু আইয়াজ হোসেনর (২) মরদেহ তাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হয়।এই ঘটনায় প্রাইভেটকারে থাকা আইয়াজের মা অনামিকা ও বাবা নূর আলম সোহান গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে বেপরোয়া যাত্রীবাহী বেপারী পরিবহনের বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী শিশু মো. আবদুল্লাহ (৭) নিহত হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন আব্দুল্লার মা রেশমা আক্তার (২৬) । মোটরসাইকেটি চালাচ্ছিলেন রেশমার স্বামী সুমন মিয়া।
নিহত আমেনা আক্তারের স্বামী ইকবাল হোসেন জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জে তাঁর ভায়রার মৃত্যর চার দিনের মিলাদের আয়োজনে যাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। দুপুর ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর এক সদস্যের ফোনে সংবাদ পান তিনি।
এদিকে নিহত রেশমার বাবা মালেক ফকির বলেন, রেশমা মগবাজারের বাসা থেকে স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে মোটরসাইকেলে আমার ছোট মেয়ের বিয়েতে অংশ নিতে মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। পরে দুর্ঘটনায় নিহত হয় মেয়ে ও নাতি। মরদেহ নিয়ে মাদারীপুরে গেছেন তারা।
এরআগে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সেতুর টোল পরিশোধের জন্য মাওয়ামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মাইক্রোবাস, একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় ঢাকা-কুয়াকাটা পথে চলাচলকারী বেপারী পরিবহনের একটি বাস। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।