নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস আজ। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘টেকসই উন্নয়ন-সমৃদ্ধ দেশ: নিরাপদ খাদ্যের বাংলাদেশ’। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কার্যক্রম সর্বসাধারণকে অবহিতকরণ এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বিষয়ে সর্বস্তরে জনসচেতনতা বৃদ্ধিই এ দিবসের প্রধান লক্ষ্য। নিরাপদ খাদ্যের অন্যতম প্রধান শর্ত ট্রান্সফ্যাট মুক্ত খাবার এবং এ লক্ষ্যে সংস্থাটি সব ধরনের ফ্যাট, তেল এবং খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা মোট ফ্যাটের দুই শতাংশ নির্ধারণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা জনস্বাস্থ্যের নিরিখে অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
ট্রান্স ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) বা ট্রান্সফ্যাট একটি পুষ্টিগুণ বিবর্জিত খাদ্য উপাদান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে ট্রান্সফ্যাট ঘটিত হƒদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ডব্লিউএইচও’র ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের কারণে বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে পাঁচ হাজার ৭৭৬ জন মানুষ মারা যায়। খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও, যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে সুপরিচিত। পিএইচও বা ডালডা সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাতকৃত ও ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় ঢাকার পিএইচও নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত দুই শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পাওয়া গেছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পিএইচও নমুনায় সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যা ডব্লিউএইচওর সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় ১০ গুণেরও বেশি।
জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১ উপলক্ষে এক প্রতিক্রিয়ায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, নিরাপদ খাদ্য সবার অধিকার। আমরা জেনেছি, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণনীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ নীতি চূড়ান্ত এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।