ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহা উদ্যাপন করতে আগাম টিকিট নেওয়া ট্রেনের যাত্রীরা ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন। যদিও প্রথম দিন গতকাল রোববার রেললাইনে সমস্যার কারণে কয়েকটি ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়, তবে সাময়িক ভোগান্তি হলেও যাত্রা মোটামুটি স্বস্তিদায়ক ছিল।

রোববার সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় ছিল স্বাভাবিক। সকালের ট্রেনে তেমন ভিড় না থাকলেও দুপুরের পর ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোয় মোটামুটি ভিড় দেখা গেছে।

এদিকে গতকাল ভোরে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে রেললাইনে সমস্যা হওয়ায় ঢাকাগামী কয়েকটি ট্রেন দেরি করে কমলাপুর পৌঁছে। এ কারণে নীলফামারীর নীলসাগর, দিনাজপুরের একতা, জামালপুরের অগ্নিবীণা এবং একটি মেইল ট্রেন দেরি করে ঢাকা ছেড়ে গেছে।

কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হওয়ার পর স্টাফ রোড গেটে রেললাইন ভেঙে গিয়েছিল। এ কারণে ডাউন ট্রেনগুলো আসতে বিলম্ব হওয়ায় আপ ট্রেনগুলো বিলম্বে ছেড়ে গেছে। দুই লাইনের ট্রেন এক লাইনে চলায় ট্রেনগুলো দেরিতে ছাড়তে হয়েছে। বেলা পৌনে ১১টার দিকে সেটা মেরামত হয়ে গেছে।

তিনি জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত হওয়ায় পার্বতীপুর হয়ে দিনাজপুর এবং জামালপুর হয়ে দেওয়ানগঞ্জ এবং জামালপুর থেকে তারাকান্দি পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

ট্রেন দেরি করায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়লেও বাড়ি যাওয়ার আনন্দে তা ঢাকা পড়ে গেছে বলে জানালেন কয়েকজন যাত্রী।

দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার কথা সকাল ১০টায়। দুই ঘণ্টা দেরি করে তা দুপুর ১২টায় ছেড়ে যায়। এ ট্রেনের যাত্রী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘আমরা আগেই চলে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি লেট। টানা দুই ঘণ্টা বসে থাকা খুব বিরক্তিকর। তবে এখন বিরক্ত লাগলেও বাড়ি যাওয়ার পর এটা আর থাকবে না।’

ঈদের আনন্দের কাছে এ ভোগান্তি তেমন কিছু নয় বলে জানান এই ট্রেনের আরেক যাত্রী শওকত আলী। তিনি বলেন, ‘ভোগান্তি যতই হোক, শেষে সবাই যখন একসঙ্গে হই, তখন এসব আর মনে থাকে না। বাড়ির সবার সঙ্গে একত্র হওয়া, বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার আকাক্সক্ষা সবার থাকে। আমরা জানি যাওয়ার পথে কিছুটা কষ্ট হবে।’

জামালপুরের অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের যাত্রী মোশারফ হোসেন বলেন, ঈদে বাড়ি যাওয়ার আনন্দের সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না।

‘ঈদের সময় বাড়ি যাওয়াটা অন্যরকম আনন্দ। এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তবে ট্রেন দেরি না করলে আরও বেশি আনন্দ হতো।’

বেলা সোয়া ২টায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনে স্ত্রী-সন্তানদের তুলে দিতে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আক্তারুজ্জামান। তিনি জানান, ঈদের আগে এবার ছুটি কম। ভিড় এড়াতে তাদের আগে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ঈদের বেশি দেরি নেই। বাচ্চাদেরও পরীক্ষা শেষ। তাদের আগেভাগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। বাড়ি গিয়ে মজা করবে। আমি ঈদের আগের দিন যাব।’

এবার ঈদের সময় প্রতিদিন সারাদেশে প্রায় দুই লাখ ৬৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে রেলওয়ে। এছাড়া ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এবং ঈদের পরে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।