ঠাকুরগাঁওয়ে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মিষ্টিকুমড়া নিয়ে চিন্তায় কৃষকেরা

শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মিষ্টিকুমড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। দাম কিছুটা ভালো থাকলেও গাছের পাতা হলদে বর্ণ ধারণ করায় আশাতীত ফলন নিয়ে ভাবছেন চাষিরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে বীজ ও কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ সহায়তা দেয়া হলেও এবারের ফলন নিয়ে ভানায় রয়েছেন তারা।

ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কিছুদিন আগে রবি জাতের মিষ্টিকুমড়া ক্ষেত থেকে উঠিয়ে বিক্রি করা হয়। খরিপ-১ জাতের মিষ্টিকুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। আর কিছুদিনের মধ্যে সেগুলো বিক্রি করবেন কৃষকেরা। সদর উপজেলার নারগুন, ভুল্লি, বড় বালিয়া, ছোট বালিয়া, আউলিয়াপুর, পুরাতন ঠাকুরগাঁও, আখানগর, ঢোলারহাটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। জেলায় ঢাকা-১, ব্লাক সুইটি, মিতালি, ব্লাক সিটি সেরা ও সোহাগীসহ নানা জাতের মিষ্টিকুমড়ার আবাদ হয়। এতে বীজ দিয়ে সহযোগিতা করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কম খরচে অধিক লাভের আশায় জেলার কৃষকেরা দিন দিন মিষ্টিকুমড়ার আবাদ করছেন বেশি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া এলাকার সফল চাষি হাবিব মো. আহসানুর রহমান পাপ্পু বলেন, গত মৌসুমের শুরুর দিকে ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর মিষ্টিকুমড়ার চাষ করেছি। এ মৌসুমে ৩০ একর জমিতে কুমড়া লাগিয়েছি। আরও প্রায় ১ মাসের মধ্যে মিষ্টিকুমড়া বিক্রি শুরু হবে। বর্তমানে বাজারে মণপ্রতি মিষ্টিকুমড়া ৭শ টাকা থেকে ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ভালো দাম পাব।

সদর উপজেলার নারগুন এলাকার কৃষক সাইফুর রহমান বলেন, ৬ বিঘা জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষ করেছি। গাছে ফুল এসেছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে কিছু কিছু গাছ হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে। কৃষি অফিসের সঙ্গে  যোগাযোগ করছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাসেল ইসলাম জানান, ২ ধরনের মিষ্টিকুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে রবি জাতের কুমড়া ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টিকুমড়া ক্ষেতে রয়েছে। বেশিরভাগ এলাকায় গাছে ফুল ধরেছে, আর মাসখানিকের মধ্যে এ জাতের মিষ্টিকুমড়া বাজারে উঠতে শুরু করবে। তবে অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে ভাইরাসজনিত কারণে কিছু গাছ হলদে বর্ণ ধারণ করায় কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা। এ বছর জেলা মোট ৩ হাজার ১৯৮০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। রবি জাতের মিষ্টিকুমড়ার আবাদ শেষে বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টিকুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। গত বছরে ১ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে খরিপ-১ জাতের মিষ্টিকুমড়ার চাষ করা হয়েছিল।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলায় মিষ্টিকুমড়ার ভালো ফলন হয়। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মাঠ পর্যায়েরও কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টিকুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। বর্তমানে বাজারে দামও ভালো রয়েছে, সামনের দিনে এ জাতের মিষ্টিকুমড়ায় কৃষকেরা ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। কৃষকদের মাঝে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উন্নত জাতের মিষ্টিকুমড়ার বীজ বিতরণ করা হয়েছিল।