শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে এ বছর গমের আবাদ কিছুটা কমেছে। কৃষকেরা গত বছর গমের দাম কম পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা গম আবাদ না করে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন বেশি। কারণ গমের চেয়ে ভুট্টায় লাভ হচ্ছে বেশি। বর্তমানে ভুট্টার বাজারদর তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি রয়েছে বলে জানা গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ মৌসুমে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪৪ হাজার ৬৯৯ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় এক লাখ ৮৫ হাজার ৫০১ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ২৭ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে, যেক্ষেত্রে গত বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক লাখ ৯৪ হাজার ৭১ মেট্রিক টন। আবাদ করা হয়েছিল ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের গ্রামের কৃষক বদিরুল ইসলাম জানান, তিনি গত বছর সাড়ে ছয় বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছিলেন। ওই বছর গম মাড়াই করার পর গমের দাম কম পাওয়ায় এ বছর দেড় বিঘা (৭৫ শতাংশ) জমিতে গম আবাদ করেছেন। মৌসুমের শুরুতে বিক্রির সময় গমের দাম কম থাকে, একই সঙ্গে গমের ফলন কম। এছাড়া সার ও কীটনাশকের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি থাকাকেও দায়ী করেন তিনি।
প্রায় দুই বিঘা জমিতে গম করেছেন সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের বোচাকুপুর গ্রামের কৃষক মোমিনুল ইসলাম। এরই মধ্যে গমের ক্ষেত সবুজ আকারে রূপ নিয়েছে। নিয়মিত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন তিনি। ফলন ভালো হওয়ার আশা করলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. আব্দুল আজিজ জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি গম আবাদ হতো ঠাকুরগাঁওয়ে। কিন্তু গত বছর গমের দাম কিছুটা কম থাকায় কৃষকেরা এ বছর গমের আবাদ কিছুটা কম করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে ভুট্টার আবাদ বেড়েছে। গমের চেয়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা ভুট্টা চাষে বেশি ঝুঁকছেন। ভুট্টার ফলনও ভালো হওয়ায় তারা দামও পাচ্ছেন চাহিদামতো। তার পরও কৃষকেরা গমের ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।