নাহিদ রেজা, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে আগাম জাতের আমন কাটা শুরু হয়েছে। এতে জেলার বেশিরভাগ কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, আগাম জাতের আমন কাটা শুরু হওয়ায় লাভবান হবেন জেলার অধিকাংশ কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, জেলার হরিপুর, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী ও সদর উপজেলায় আগাম জাতের আবাদকৃত এসিআই-১-২, হাইব্রিড ও ব্রি ধান-৪৯ ও ৫২ জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব আগাম জাতের ধান উৎপাদনে সময় লাগে ৯০ থেকে ১০০ দিন।
চলতি মৌসুমে জেলায় ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৩৬ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে। আর এ থেকে ধান উৎপাদিত হবে তিন লাখ ৩৬ হাজার ৮৯ হাজার টন ধান। এর মধ্যে আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। আর বন্যায় সাত হাজার ৪৭৯ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা আবার রোপণ করা হয়েছে। তবে এসব ধান উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি হবে।
সদর উপজেলার ফারাবাড়ী গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, এবার বন্যায় রোপণ করা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা আবার রোপণ করতে হয়েছে। এতে কৃষকরা বেশ ক্ষতির শিকার হয়েছেন। আর দেরিতে ধান রোপণ করায় তেমন একটা ফলন আসবে না। আর যারা অন্যের জমি বরগা নিয়ে ধান আবাদ করেছেন, তারা আরও বেশি লোকসানে পড়বেন। কেননা এক বিঘা জমিতে আমন আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় আট হাজার টাকা। আগাম জাতের উৎপাদনের সময় লাগে ৯০ থেকে ১০০ দিন। এ থেকে ধান উৎপাদিত হয় ১৪ থেকে ১৬ মণ পর্যন্ত। আর অন্য জাতের ধান উৎপাদনে সময় লাগে ১২০ দিন পর্যন্ত। ধান উৎপাদন হয় ২০ থেকে ২৫ মণ পর্যন্ত। বর্তমানে প্রতি মণ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। দাম পেলেও এবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুষিয়ে ওঠা কঠিন হবে। তা না হলে কৃষকরা বেশ লাভবান হতেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাউদুদুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে জেলায় আবাদ করা নতুন জাতের আগাম ধান কাটা শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হবে। আরও আশা করা হচ্ছে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হবে।