ডায়রিয়াকে নিরীহ রোগ মনে করা হলেও এটি জটিল হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি পানি ও লবণশূন্যতা দেখা দেয়।
ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে। পথেঘাটে খাবার খেয়েছেন। ঈদেও গুরুপাক, তেলচর্বিযুক্ত খাবারসহ নানা ধরনের ভাজাপোড়া খাচ্ছেন অনেকে। এর ফলে পেট খারাপ ও বদহজম হওয়ার পাশাপাশি ডায়রিয়ারও ঝুঁকি রয়েছে।
ডায়রিয়া কী: ডায়রিয়া পানি ও খাদ্যবাহিত রোগ। কলেরাও তা-ই। ডায়রিয়াকে নিরীহ রোগ মনে করা হলেও এটি জটিল হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি পানি ও লবণশূন্যতা দেখা দেয়। তাই ডায়রিয়া হলে অবহেলা করা যাবে না।
কীভাবে হয়: পথঘাট ও হোটেল-রেস্তোরাঁর বাসি ও উম্মুক্ত খাবার ডায়রিয়ার জীবাণু বিস্তারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এসব খাবারের সঙ্গে মিশে থাকে জীবাণু ও ধুলাবালি। খোলা খাবারের ওপরে মাছি বসে। মাছি হলো বিভিন্ন রোগজীবাণুর বাহক। উপরন্তু এসব খাবার যারা প্রস্তুত ও পরিবেশন করেন, তারা নিয়মিত হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যকর পন্থা প্রায়ই মানেন না। এর ফলে যাত্রাপথে উম্মুক্ত ও বাসি খাবার পরিহার করা অত্যন্ত জরুরি। যারা ঈদ শেষে আবার ঢাকায় ফিরছেন, এ বিষয়ে তারা সতর্ক থাকবেন।
যা করতে হবে: যাত্রাপথ দীর্ঘ হলে অবশ্যই বাড়ি থেকে তৈরি করা নিরাপদ খাবার সঙ্গে নিতে হবে। নিতে হবে নিরাপদ বিশুদ্ধ পানিও।
গরমের মৌসুমে অনেকে পানি ঠাণ্ডা করতে বরফ মিশিয়ে নেন। তবে এ বরফ হতে হবে বিশুদ্ধ পানির তৈরি। অজানা উৎস থেকে তৈরি বরফ অবশ্যই ব্যবহার করা যাবে না।
খাবার তৈরি করার আগে ও খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। হাত ধোয়ার জন্যও পরিষ্কার পানি ব্যবহার করতে হবে।
টয়লেট ব্যবহারের পরও একই নিয়মে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
দ্রুত চিকিৎসা নিন: যাত্রাপথে কিংবা বাড়িতে ছুটি উদ্যাপনের সময় ডায়রিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রæত চিকিৎসা নিন। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে পানিশূন্যতা না হয়। ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতা থেকে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ বিভিন্ন লবণের ঘাটতি মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। একবার পাতলা পায়খানা হলেও খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে। যদি বমি হয়ে যায়, অথবা তীব্র পানিশূন্যতা দেখা দেয়, তবে শিরায় স্যালাইন দেয়া লাগতে পারে।
লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ, ঢাকা