নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। গতকাল সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট ৫৮৪ কোটি টাকার কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে ৬০৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
তথ্যমতে, গতকাল দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আট পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৯৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে এই সূচক ছিল চার হাজার ৯৫৬ পয়েন্ট। গতকাল সকাল থেকেই ডিএসইতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। দিনের শেষভাগে সামান্য নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় আট পয়েন্ট বেড়েছে।
ডিএসই তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকালের লেনদেনের চিত্র কয়েক সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন ছিল। গতকাল বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে। ডিএসইতে মোট ৪০০টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৭৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৬৯টি ফান্ড ও কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। দিনশেষেও ৫৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২২০টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। বিপরীতে ৭৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর কমেছে। অপরিবর্তিত ছিল ২৭টি কোম্পানি এবং ফান্ডের দর। ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৩টি কোম্পানি এবং ফান্ডের মধ্যে শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। বিপরীতে ৪০টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর কমেছে।
অপরিবর্তিত ছিল ১১টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর। আর ‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। বিপরীতে ৫১টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর কমেছে। অপরিবর্তিত ছিল ১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর।
একইভাবে মিউচুয়াল ফান্ডেও তেজি ভাব দেখা গেছে। দিনশেষে লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে ২৮টির ইউনিট দর ও একটির দর কমেছে এবং সাতটির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া করপোরেট বন্ড খাতের চারটি কোম্পানির মধ্যে একটির দর কমেছে এবং তিনটির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে গতকাল ডিএসইতে মোট ২২ কোটি ৪২ লাখ সাত হাজার ৮৫৩টি শেয়ার ও ইউনিট এক ৪৩ হাজার ৮৫৬ বার লেনদেন হয়েছে। এতে দিনশেষে মোট বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৮৪ কোটি ২৫ লাখ ৭৮ টাকা।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন পর লেনদেন বৃদ্ধি পুঁজিবাজারে ইতিবাচক সংকেত দিতে পারে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। তবে পুঁজিবাজারের এই গতিশীলতা আগামী দিনগুলোতেও বজায় থাকে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করার বিষয়। বিনিয়োগ করতে চাইলে পরিস্থিতি ও কোম্পানির অবস্থার তথ্য জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে।