নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমায় সূচকের পতন দেখা গেছে। একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, আর গত সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ৩৪৫টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৭ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ১৭টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩১৮ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ৩৬৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ।
এদিকে গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে ওঠে এসেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ বা ১ টাকা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ১১ টাকা ৪০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ২ লাখ ২৬ হাজার ৯৭২টি শেয়ার ১৭৭ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর ১০ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১১ টাকা ৪০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১২ টাকা ১০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘জেড’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। ৪০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি ৬৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানির রিজার্ভ ঘাটতির পরিমাণ এক হাজার ১৭৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১০ কোটি ছয় লাখ ৭৯ হাজার ৯৪৪টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৩৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ৪৩ দশমিক ২২ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এদিকে সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির তালিকায় এর পরের অবস্থানে থাকা এম্বি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ১০ দশমিক ০২ শতাংশ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেডের ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, রহিম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
গত সপ্তাহে লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করে আইটি খাতের কোম্পানি অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অবদান ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আইটি খাতের কোম্পানিটি ২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৭২ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট সাত কোটি ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ১৯২ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩২ দশমিক ৩৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং বাকি ৪৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ জুন, ২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগকারীদের ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ১৩ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২৩ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৯৫ পয়সা। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে এক টাকা ৩৮ পয়সা।