Print Date & Time : 3 August 2025 Sunday 6:57 pm

ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ১৬.১০ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সবকটি সূচক ইতিবাচক থাকার পাশাপাশি দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে। বাজার মূলধন বেড়েছে এক দশমিক শূন্য চার শতাংশ। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে ঈদের ছুটির কারণে মাত্র দুই কার্যদিবস লেনদেন হয়, যে কারণে মোট লেনদেনের ব্যবধান অনেক বেশি ছিল। মোট লেনদেন বেড়েছে ১৯০ দশমিক ২৬ শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন দিন সূচক কমেছে, বেড়েছে মাত্র দু’দিন। তবে সূচকের পতনের তুলনায় উত্থানের হার বেশি হওয়াতে সপ্তাহশেষে তিনটি সূচক ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৬০০ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ১১ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ২৬৯ দশমিক ৬১ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসই ৩০ সূচক ১২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৯৬০ দশমিক ৭২ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৪৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮১টির, কমেছে ১৩৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৯ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ছয়টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫৮৩ কোটি ৯৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৭ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৫০২ কোটি ৯৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৯ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৮০ কোটি ৯৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বা ১৬ দশমিক ১০ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার ৯১৯ কোটি ৭০ লাখ ৯৪ হাজার ৩৩৫ টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার পাঁচ কোটি ৮৯ লাখ সাত হাজার ২৫৭ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার বেড়েছে এক হাজার ৯১৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা বা ১৯০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৯২ হাজার ১৪০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৯৬ হাজার ২২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে এক দশমিক শূন্য চার শতাংশ বা চার হাজার ৮৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে আর্থিক খাতের ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা রংপুর ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টের দর ২৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ ও প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলসের দর ২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। এইচআর টেক্সটাইলের দর ১৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং নাহি অ্যালুমিনিয়ামের দর ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া নর্দার্ন জুটের দর ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের দর ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের দর ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ, সায়হাম টেক্সটাইলের দর ১২ দশমিক ৪২ শতাংশ ও ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর ১২ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে অবস্থান করে গ্রামীণ ওয়ান স্কিম টু। ইসলামি ইন্স্যুরেন্সের দর ৯ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর আট দশমিক ৮৮ শতাংশ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর চার দশমিক ৪৮ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স আট দশমিক ৩৮ শতাংশ, রূপালী ইন্স্যুরেন্স সাত দশমিক ৭৬ শতাংশ, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক সাত দশমিক ৪৬ শতাংশ, ইস্টার্ন কেব্লসের দর সাত দশমিক ২১ শতাংশ, সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর সাত দশমিক ১০ শতাংশ ও সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়েছে।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ দশ কোম্পানি হলো ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, অ্যাকটিভ ফাইন, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, বিবিএস কেব্লস লিমিটেড, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ও রংপুর ডেইরি।
অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৯১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৫টির, কমেছে ১০২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৪টির দর।
সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে দশমিক ৭৭ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে দশমিক ৭৭ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বাড়ে দশমিক ৩১ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক এক দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়েছে। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে এক দশমিক ১৮ শতাংশ।
সিএসইতে গত সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ২০৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল মাত্র ৫৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা। লেনদেন বেড়েছে ১৪৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মাত্র দুই কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে।
১৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক। এর পরের অবস্থানগুলোতে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, মাইডাস ফাইন্যান্সিং, ইমাম বাটন, পদ্মা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডি ফাইন্যান্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রিমিয়ার লিজিং, জিএসপি ফাইন্যান্স ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক।
অন্যদিকে টপ টেন লুজার তালিকায় উঠে আসে আজিজ পাইপস, মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাম্বি ফার্মাসিউটিক্যালস, মালেক স্পিনিং, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, এইচ আর টেক্সটাইল, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং ও বিডি ওয়েল্ডিং। সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ব্যাংক, বিডি ফাইন্যান্স, বিবিএস কেব্লস, বেক্সিমকো লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও দি প্রিমিয়ার ব্যাংক।