ডিএসইতে সূচকের উত্থানের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন

নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি: পতনের ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। বিপরীতে দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও সিএসইতে কমেছে। তবে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর বেড়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৮.৭১ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৭৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে এবং ডিএস৩০ সূচক ৮ দশমিক ০৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৭৮০ পয়েন্টে স্থির হয়েছে। তবে লেনদেনে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে। সেইসঙ্গে সিএসইতে লেনদেন কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯০টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২১১টি ফান্ড এবং কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১০৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৭৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০৬ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩৭ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ১০টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৩টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৩টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৩ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩টি শেয়ার ও ইউনিট ৯৮ হাজার ৩৭০ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৮৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ১৭৪টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৪০টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে; যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকালের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিরতা দেখাচ্ছে। যদিও বেশিরভাগ শেয়ারের দর বাড়ছে। তবে সামগ্রিক লেনদেনের পরিমাণ এবং সূচকের ভিন্নমুখী প্রবণতা সতর্কতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের ভেবেচিন্তে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। আগামী কার্যদিবসে বাজারের গতিবিধি কী হয়, তা জানতে অপেক্ষাও করতে বলছেন তারা।