নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : পতনের ধাক্কা সামলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও অনেকটাই বেড়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৭৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৭৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৭টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩১৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৪৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৭৯ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৩ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৭০টি ফান্ড ও কোম্পানির দরদাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ২০টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ২টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৪টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৬টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৩৭ হাজার ৬৯৩ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৪১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৬৩ কোটি ২ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনেরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতেও এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।