ডিএসইতে সূচকের পতনে কমেছে লেনদেন

নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : কয়েক মাস ধরে চলা ধারাবাহিক দরপতনের কারণে দেশের পুঁজিবাজার ইতোমধ্যে গভীর সংকটে রয়েছে। এদিকে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। একইসঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।

ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২৪ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৬৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএসইএস ৬ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ ৯ পয়েন্ট কমেছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে।

ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৪টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৯৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৩৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৬২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।

এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে
মাত্র ৬৪ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১২৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৭ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।

একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।

জেড ক্যাটাগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
এদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র সাতটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৮টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১১টি ফান্ডের ইউনিট দর।

ডিএসইতে গতকাল মোট ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৮ হাজার ২৬৩টি শেয়ার ও ইউনিট ৮৭ হাজার ৩৮৪ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২২৯ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৭৫ কোটি টাকা।

এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ১৭৬টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৮১টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৩৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৯ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকালের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের পতন এবং বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমে যাওয়া বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের গতিবিধি কেমন থাকে, তা দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামী কার্যদিবসে বাজারের গতিবিধি কী হয়, তা জানতে অপেক্ষাও করতে বলছেন তারা।