নিজস্ব প্রতিবেদক : পতনের ধাক্কা সামলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৭ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪২ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৭ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৭৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৬টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২০২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১১২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৮২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২১৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৩২ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৪৩ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
জেড ক্যাটাগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
এদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র সাতটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১০টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৯টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১২ কোটি ৫২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫০টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ১১ হাজার ৪০০ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৩২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩১৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ১৯৩টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৭৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৪২টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ২৬ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১১ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনেরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোয়ও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।