ডিএসইতে সূচকের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন

নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : পতনের ধাক্কা সামলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।

ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৫ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৮৩২ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৩ দশমিক ০৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।

ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৯৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৫৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২২৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৬৮ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৬ কোম্পাুনির শেয়ার ও ইউনিট দর।

একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮০টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ছয়টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।

‘জেড’ ক্যাটাগরির ৯৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ৬৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।

একই সঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ২১টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে চারটি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১১টি ফান্ডের ইউনিট দর।

ডিএসইতে গতকাল মোট ১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯৪টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৫২ হাজার ৫৯৪ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৪৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪১৩ কোটি ২১ লাখ টাকা।

এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২২৪টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬০টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪১টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর কমেছে। দিনশেষে ২৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে; যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৪৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনেরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতেও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।