নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন পর দেশের পুঁজিবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ব্যাংকগুলো। এতে সার্বিক পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
গত কয়েক কার্যদিবসের মতো গতকাল রোববার সার্বিক পুঁজিবাজার ছিল ইতিবাচক। ডিএসইতে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমলেও সব মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসে মূল্যসূচক বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি। এতে এক সপ্তাহেই ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ১৫৯ পয়েন্ট। ডিএসইতে বাজার মূলধন বাড়ে ১৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।
এ পরিস্থিতিতে রোববার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে অব্যাহত থাকে।
তবে লেনদেনের শেষদিকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যায়। অবশ্য এর মধ্যেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখায় ব্যাংক। তালিকাভুক্ত ৩৫টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৪টি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। আর একটির দাম আগের স্থানেই রয়েছে। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক এমন দাপট দেখানোর ফলে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৬টির। আর ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৯টির দাম পাঁচ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে হলটেড (এক দিনে যতটা বাড়া সম্ভত ততটাই বেড়েছে) হয়েছে ১৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবরের পর এখন সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে অবস্থান করছে। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে ছিল।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সব মূল্যসূচক বাড়ার দিনে ডিএসইতে ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৫৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ফরচুন সুজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৬৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৬৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑআইএফআইসি ব্যাংক, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, আইটিসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, মালেক স্পিনিং ও সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।
সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩০৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।